শেয়ার বিজ ডেস্ক: কভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে রোলস রয়েসের শেয়ারদর। প্রতিষ্ঠানটির জেট ইঞ্জিন ও প্রতিরক্ষা ব্যবসায় প্রত্যাশিত মুনাফা বেড়েছে। খবর: দ্য গার্ডিয়ান।
লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচকের গত বুধবারের তথ্য অনুযায়ী, রোলস রয়েসের অ্যারোস্পেস এবং প্রতিরক্ষা ইউনিটের বিক্রি বেড়েছে এবং মুনাফায় রয়েছে এ দুই খাত।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে রোলস রয়েসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্ব নেন টুফান এরগিনবিলজিক। মুনাফা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি কার্যক্রম শুরু করেন। এরই মধ্যে তার নানা পদক্ষেপের সুফল পাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। মহামারির সময় ভ্রমণে বিধিনিষেধ জারি করা হয়, ফলে স্থবির হয়ে আসে ব্যবসা। সেই মন্দা থেকে তার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি প্রতিযোগীদেরও বেশ পেছনে ফেলেছেন তিনি।
ভ্রমন শিল্পে কভিড সংকটের প্রভাব কাটিয়ে তুলতে প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত চার্জ আরোপ করে। এছাড়া ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ায় রোলস রয়েস। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হয় প্রতিষ্ঠানটি।
বুধবার দিনের শুরুতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর বাড়ে ১৯ শতাংশ। শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১ দশমিক ৯১ পাউন্ড। ২০২৩ সালের ১১ মার্চের পর যা সর্বোচ্চ।
এরগিনবিলজিক এর আগে তেল কোম্পানি বিপির জ্যেষ্ঠ নির্বাহী ছিলেন। জানুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, রোলস রয়েসে পরিবর্তন আসা জরুরি। তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে দীর্ঘমেয়াদে বাজারে টিকে থাকার জন্য দ্রুত পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেন। গত মাসে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এ সময় তিনি ছোট উড়োজাহাজের জন্য ইঞ্জিন তৈরির বিষয়টি বিবেচনার ওপর জোর দেন এবং এ খাতে লাভজনক ব্যবসার ইঙ্গিত দেন।
রোলস রয়েসের এ আর্থিক পরিবর্তন বিস্মিত করেছে বিনিয়োগকারীদের বলে জানান বিনিয়োগ ব্যাংক জেফারিসের একজন বিশ্লেষক ক্লো লেমারি। কেননা ২০২৩ সালের শুরুর চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে এর শেয়ারদর। এ ধারা ধরে রাখতে তিনি বছরের দ্বিতীয়ার্ধেও বিক্রি বৃদ্ধি, খরচ কমানো এবং উচ্চদামের ওপর জোর দিয়েছেন।
ইন্টারঅ্যাকটিভইনভেস্টরের বিনিয়োগ বিভাগের প্রধান ভিক্টোরিয়া স্কলার বলেন, দারুন গতিতে চলছে রোলস রয়েসের শেয়ার। টুফান এরগিনবিলজিককে ছাড়া ভালোভাবে চলত না প্রতিষ্ঠানটি। তার পরিকল্পনার ফলে পরিচালন বিভাগের উন্নতি ঘটেছে।
বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের চেয়ে ভালো মুনাফা করেছে রোলস রয়েসÑবছরের প্রথমার্ধে তাদের আয় ৬৬০ মিলিয়ন থেকে ৬৮০ মিলিয়ন পাউন্ডের মধ্যে ছিল। পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ৩২৮ মিলিয়ন পাউন্ড আয় করতে পারে। তাই নতুন করে বার্ষিক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ১ বিলিয়ন পাউন্ড নয়, চলতি বছরে ১ দশমিক ২ থেকে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন পাউন্ড আয় হতে পারে।
এরগিনবিলজিক বলেন, আমাদের রূপান্তর কর্মসূচি কেবল শুরু হয়েছে। আসছে বছরগুলোয় আরও মুনাফায় থাকব আমরা।
প্রসঙ্গত, রোলস রয়েসের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও আকর্ষণীয় পণ্যের খেতাবের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি তার গুণগতমানও বজায় রেখেছে। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিলাসবহুল গাড়ি হিসেবে পরিচিত এই রোলস রয়েস।
আভিজাত্যের প্রতীক রোলস রয়েসের সব পণ্য। এই ব্র্যান্ডের গাড়ি নান্দনিক ব্র্যান্ড হিসেবে সব সময় চেষ্টা করে থাকে, তাদের এই আভিজাত্য যেন যেকোনো মূল্যে বজায় থাকে। সাধারণত ৯০ শতাংশ রোলস রয়েস গাড়ি বানানো হয় ক্রেতা বা গ্রাহকের পছন্দের ওপর ভিত্তি করে। তাদের পণ্য তুলনামূলক দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।