চোখের জটিল রোগ ইউভাইটিস

চোখের পুষ্টিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য চোখের ভেতর রক্তনালি ভরা একটি স্তর বা লেয়ার আছে। এটিকে ইউভিয়া বা ভাসকুলার কোট বলা হয়। চোখের মধ্যস্তর এটি। ইউভিয়া ও এর চারপাশের টিস্যুগুলোর প্রদাহকে ‘ইউভাইটিস’ বলে। রোগীর একটি অথবা উভয় চোখই এতে আক্রান্ত হতে পারে। চোখে আঘাত, জীবাণুর সংক্রমণ, কানেকটিভ টিস্যু রোগাক্রান্ত হওয়াসহ প্রভৃতি কারণে এ রোগ হতে পারে।

লক্ষণ: এ রোগের লক্ষণ হিসেবে সাধারণত চোখে ব্যথা, চোখ লাল হওয়া, আলোতে না যেতে পারা, মাথাব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি প্রভৃতি দেখা দিতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ অনেক দেরিতে বোঝা যায় বলে রোগ জটিল রূপ ধারণ করে। সময়মতো চিকিৎসা না করলে রোগী অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। এছাড়া চোখের সামনে কালো বিন্দু ভেসে বেড়াতে দেখা, মাথায় যন্ত্রণা, তারারন্ধ্র ছোট হয়ে যাওয়া, চোখের তারার রং পরিবর্তন হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া প্রভৃতি উপসর্গ থাকলে সতর্ক হতে হবে।

কারণ: ইউভাইটিস রোগের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। সাধারণত অটোইমিউন রোগের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি দেখা যায়, যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা রোগীর চোখসহ বিভিন্ন টিস্যুর ওপর আক্রমণ করে। যেমনÑআলসারেটিভ কোলাইটিস, এইচআইভি সংক্রমণ, হারপিস, লাইম ডিজিজ, সিফিলিস, টিউবারকিউলোসিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, জুভেনাইল আর্থ্রাইটিস, চোখে তীব্র আঘাত, কোনো বিষাক্ত দ্রব্য চোখে ঢুকে যাওয়া ও ধূমপানে এমন হতে পারে।

নির্ণয়: রোগটি নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসক রোগীর চোখ পর্যবেক্ষণ করেন। এছাড়া কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়। যেমনÑরক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা ও প্রোটিনের মাত্রা নির্ণয়। শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার ইতিহাস সংগ্রহ করা। ত্বকের পরীক্ষা। চোখের ভেতরে উপস্থিত তরলের পরীক্ষা।

চিকিৎসা: প্রদাহ কমাতে কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ ব্যবহƒত হয়। তারারন্ধ্র প্রসারণে সাহায্য করতে মাইড্রিয়াটিক চোখের ড্রপ। সংক্রমণের ক্ষেত্রে, অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার। গাঢ় রঙের চশমা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতায় সাহায্য করতে পারে।এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুতই চোখের চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। নয়তো বিপদ হতে পারে।

অধ্যাপক ডা. সৈয়দ এ কে আজাদ
চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন, বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০