নিজস্ব প্রতিবেদক: ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেছেন, ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশনের কারণে সরকারের রাজস্ব আয় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল সোমবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর-বহির্ভূত রাজস্ব আয়ের নতুন খাতসমূহ নির্ধারণ সংশ্লিষ্ট এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কর্মশালায় ভূমি মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন ভেন্ডার কোম্পানির কর্মকর্তারা অংশ নেন।
ভূমি সচিব এই সময় আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনায় এবং ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে গত কয়েক বছরে ভূমি ব্যবস্থাপনা ডিজিটাইজেশনে অভূতপূর্ব কিছু মৌলিক পরিবর্তন হয়েছে। এই অগ্রগতির ফলে ভূমি রাজস্ব আদায় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষ, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব ভূমিসেবা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভূমি খাত থেকে যেন দক্ষভাবে জনস্বার্থে শতভাগ রাজস্ব আদায় হয়, তা ভূমি মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করবে।
সচিব জানান, এ পর্যন্ত ‘স্মার্ট ভূমি উন্নয়ন কর’ সিস্টেম থেকে প্রায় ৫২০ কোটি টাকা, ‘স্মার্ট নামজারি’ সিস্টেম থেকে প্রায় ২৩০ কোটি টাকা এবং ‘স্মার্ট ভূমি রেকর্ডস’ সিস্টেম থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকাসহ মোট প্রায় ৭৭০ কোটি টাকা অটোমেটেড চালান সিস্টেমের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে তাৎক্ষণিকভাবে জমা হয়েছে। প্রতিদিন অনলাইনে গড় রাজস্ব আদায় পাঁচ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে।
কর্মশালায় অংশ নেয়া ব্যক্তিরা রাজস্ব বৃদ্ধির বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে, যেমন আইবাস সিস্টেম থেকে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা সরাসরি ভূমি মালিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠানোর ব্যবস্থা, ভূমি ডেটা ব্যাংকের মাধ্যমে খাসজমি, অধিগ্রহণকৃত জমি এবং সায়রাত মহল-সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে যাচাই করার ব্যবস্থা নেয়া, খাসজমি অব্যবহƒত না রেখে তা উৎপাদনশীল কাজে লাগানো, রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ, ভূমি রেজিস্ট্রেশনের পরে নির্ধারিত ফি দিয়ে অটোমেটেড সিস্টেমের মাধ্যমে দলিল লেখার কাজ সম্পন্ন করা, জমির শ্রেণিকরণ ও ডেটাবেজ তৈরি, ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে ডিজিটাল মনিটরিং নিশ্চিতকরণ; ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোয় কিয়স্ক স্থাপন প্রভৃতি। ভূমি মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে এসব উত্থাপিত প্রস্তাবের বেশিরভাগ বাস্তবায়ন করেছে।
উল্লেখ্য, ভূমি থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব আয়ের প্রচলিত প্রধান উৎসগুলো হচ্ছেÑভূমি উন্নয়ন কর, জরিপ ও ভূমি বন্দোবস্ত প্রদান বাবদ আদায়, হাটবাজার, অর্পিত সম্পত্তি, পরিত্যক্ত সম্পত্তি, জলমহাল, পুকুর ও বালিমহাল ইজারা প্রভৃতি।