প্রবাসে এনআইডি সেবা এবার যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এবার যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকাভুক্ত করে স্মার্ট এনআইডি দিতে চায় নির্বাচন কমিশন। গতকাল সোমবার কমিশন সভা শেষে ইসির এ সিদ্ধান্তের কথা জানান সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সকালে কয়েকটি বিষয় নিয়ে সভা হয়।

পরে নির্বাচন ভবনে ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব বলেন, বাংলাদেশি প্রবাসী নাগরিকদের এনআইডি করার যে পাইলট প্রকল্প সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলছে, তার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও দুটি দেশ যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবে কাজ শুরুর অনুরোধ জানিয়েছে। সেগুলো কাজের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

কভিডকালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি সেবা দিতে অনলাইনে আবেদন নেয়া শুরু করে। ছয়টি দেশে তা শুরু হলেও সাড়ে তিন বছর পর গত জুলাইয়ে আরব আমিরাতে স্মার্ট কার্ড তুলে দেয়া হয়। যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাতে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই এনআইডি সেবা দেয়ার আশা রাখেন সচিব।

তিনি বলেন, ‘আমরা এটা শুরু করেছি। কবে পাবে, না (দুই দেশে টিম) যাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। তবে আশা করি, আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে করতে পারব।’

১৫টি দেশে পর্যায়ক্রমে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, কুয়েত, ওমান, মালয়েশিয়া, কাতার, বাহরাইন, জর্ডান, ইতালি, সিঙ্গাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপ ও কানাডায় নিবন্ধন কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে।

এনআইডি পেতে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও মালদ্বীপে থাকা পাঁচ হাজারেও বেশি প্রবাসী নাগরিক এরই মধ্যে আবেদন করেছেন।

এখন থেকে ১৫ বছর আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন শুরুর সময়ই প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করা ও এনআইডি দেয়ার দাবি ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা পেরিয়ে কেএম নূরুল হুদা কমিশন ২০১৯ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় অনলাইন নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু এরপর কভিডকালে সেই উদ্যোগ থমকে যায়।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলে উৎসাহিত করবে নির্বাচন কমিশন। ইসি সচিব বলেন, বিধিমালায় অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের ফরমে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা যাবে না।”

নির্বাচন কমিশন সচিব জানান, সোমবারের কমিশন সভায় ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন’-এর খসড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট সরকারি নির্দেশনার আলোকে মামলার রায় মেনে সামরিক শাসনামলের অর্ডিন্যান্স ও আইনগুলো বাংলায় করা হবে। এজন্য ১৯৮৩ সালের অর্ডিন্যান্সটি বাংলায় অনুবাদ করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে  গতকাল সভায় বর্তমান ইসির ২০২৩ সালের এ খসড়া অনুমোদিত হয়েছে। এখন ইসি সচিবালয় তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। সেখানে ভেটিংয়ের পর মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়ে সংসদে যাবে। এ খসড়ায় কোনো পরিবর্তন হয়নি, শুধু বাংলায় হবে, সালগুলো পরিবর্তন হয়ে ২০২৩ হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব জানান, সিইসি ও ইসির বিদ্যমান সুবিধাদি একই থাকছে। সিইসি আপিল বিভাগের বিচারপতির সমান সুযোগই পাবেন; আর কমিশনাররা পাবেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমান সুযোগ-সুবিধা।

কমিশন সভায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ নীতিমালা, প্যানেল প্রস্তুত নির্দেশিকা, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সূচি ও ভোটের সময় মাঠকর্মকর্তাদের আপ্যায়ন ভাতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্রিফিংয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ও এনআইডি উইং মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০