ব-দ্বীপ ব্যবস্থাপনায় বড় বাধা সমন্বয়হীনতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশ। এই ব-দ্বীপ ব্যবস্থাপনার জন্য সরকার প্রায় শতবর্ষ মেয়াদি বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ প্রণয়ন করেছে। বর্তমানে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। এই সমন্বয়হীনতাই ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বা ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

গতকাল পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ ইমপ্লিমেন্টেশন প্রোগ্রাম: আরবান এরিয়াস’ শীর্ষক এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও  পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং সম্মাননীয় অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকার। জিইডির সদস্য (সচিব) ড. মো. কাউসার আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিজিআইএসের সিনিয়র আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল এক্সপার্ট ড. ফারহানা আহমেদ। বক্তব্য দেন জিইডির প্রধান খান মো. নূরুল আমীন।

এমএ মান্নান বলেন, ডেল্টা প্ল্যানে যে ৬টি হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঢাকা। রাজধানীকে বাঁচাতে হলে সমন্বিতভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়সাধনে গুরুত্ব দিতে হবে।

আতিকুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর উন্নয়নে সবচেয়ে বড় বাধা বিভিন্ন জলাভূমি দখল, দূষণ ও দুষ্টলোকের কারসাজি। এছাড়া কোনো কিছু করতে গেলে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর থেকেই নানা সমস্যা আবির্ভূত হয়। তিনি বলেন, সিএস খতিয়ানে যে জায়গাটি খাল হিসেবে চিহ্নিত, মহানগর জরিপে সেটি আর খাল নেই। সেখানে আবাসিক এলাকা হয়ে গেছে। এখন সিএস খতিয়ান অনুসরণ করে কোনো উচ্ছে অভিযান পরিচালনা করতে গেলে সরকারের অন্যান্য দপ্তর থেকে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এক্ষেত্রে সবার মধ্যে সমন্বয় দরকার। রাজধানীকে দখলদার মুক্ত করতে হলে সিএস খতিয়ান অনুসরণ করেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

ড. শামসুল আলম বলেন, নগরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনগুলোকে দায়িত্ব দেয়া দরকার। সব কাজ কেন কেন্দ্রীয় সরকারের দপ্তরের হাতে থাকবে? নির্বাচিত মেয়রদের দায়িত্ব দিতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোয় আরও বেশি গণতন্ত্রায়ন ও তাদের হাতে অধিক মাত্রায় দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। তা না হলে দক্ষ নগর ব্যবস্থাপনা প্রচলন করা যাবে না। তিনি বিভিন্ন শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ও ওয়াসার কার্যক্রম সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোর হাতে ন্যস্ত করার বিষয়ে পরামর্শ দেন।

সত্যজিত কর্মকার বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও জলাবদ্ধতা নিরসন হয়নি। উল্টো আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেল, সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সিডিএর কার্যক্রমের কোনো সমন্বয় নেই। সিডিএ যে কাজ করেছে সেটি সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করেনি। ফলে সিটি করপোরেশন ওই প্রকল্পের সফলতার জন্য সহায়তা করেনি। এভাবে বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধনের বিকল্প নেই।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০