শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রতিবেশী দেশগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও ফুকুশিমা পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্টের বর্জ্য আজ বৃহস্পতিবার থেকে প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলা শুরু করবে জাপান। প্ল্যান্টে জমে থাকা ১ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন টন তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য প্রায় ৩০ বছর ধরে ফেলা হবে মহাসাগরে। খবর: বিবিসি।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা গত মঙ্গলবার এক ক্যাবিনেট সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত জানান। প্রধানমন্ত্রী পাওয়ার প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষকে আবহাওয়া ও সাগরের পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে ২৪ আগস্ট (আজ) থেকে বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য দ্রুত প্রস্তুতি নিতে বলেন।
ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে ২০১১ সালে ভেঙে পড়ে ফুকুশিমা নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট। এর পর থেকে সেখানে এই বিপুল পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পানি জমা হয়।
প্ল্যান্ট অপারেটর টেপকো জানিয়েছে, বর্জ্য পানি নিষ্কাশনের জন্য এরই মধ্যে এক হাজার লোহার ট্যাঙ্ক পরিশোধিত পানি দিয়ে পূর্ণ করা হয়েছে। তাদের কাছে পানি বহন করার মতো আর পাত্র নেই। বাকি পানি নিষ্কাশনের জন্য তারা মাটির এক কিলোমিটার নিচে পাইপ ব্যবহারের কথা ভাবছে। পাইপের মাধ্যমে ধীরে ধীরে পানি মহাসাগরে ছাড়া হবে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫০০ হাজার লিটার পরিশোধিত পানি সমুদ্রে ছাড়া হবে। নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টটির পরিচ্ছন্নতা প্রক্রিয়ায় বর্জ্য পানি নিষ্কাশন শুধু একটি পর্যায়। ধাপে ধাপে প্ল্যান্টের তিনটি রিঅ্যাক্টর থেকে তেজস্ক্রিয় ধ্বংসাবশেষ ও নিউক্লিয়ার ফুয়েল সরানো হবে।
পারমাণবিক চুল্লির গলিত রিঅ্যাক্টর শীতল করতে মাটির নিচের পানি ও বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করা হতো। প্ল্যান্ট ভেঙে যাওয়ায় গত ১২ বছরে সেখানে তেজস্ক্রিয় পানি জমে যায়।
টেপকোর দাবি, ট্রিটিয়াম ছাড়া অন্য তেজস্ক্রিয় পদার্থ পানি থেকে ফিল্টার করা হয়েছে। ফলে পরিশোধিত পানির অবস্থা তেজস্ক্রিয় বিপদমাত্রার অনেক নিচে। জাতিসংঘের অ্যাটোমিক ওয়াচডগও তাদের পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছে। তবে প্রতিবেশী দেশগুলোয় জাপানের এই পরিকল্পনার সমালোচনা হচ্ছে।
এনভায়রনমেন্ট গ্রুপ গ্রিনপিসের দাবি, তেজস্ক্রিয় পানি ছাঁকন পদ্ধতিতে ত্রুটি রয়েছে। আগামী বছরগুলোয় তারা সমুদ্রে ‘প্রচুর’ তেজস্ক্রিয় পদার্থ জমা হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। চীনের অভিযোগ, প্রশান্ত মহাসাগরকে জাপান ‘নর্দমার’ মতো ব্যবহার করছে।