ডেঙ্গুতে এক দিনে ১১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৩২৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪৮ জনে।

এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৩২৭ জন। এ নিয়ে চলতি বছর দেশে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ৫১১ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলাম সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে গতকাল এ তথ্য জানানো হয়।

হাসপাতালে ভর্তি রোগী এবং মৃতের এ সংখ্যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৮ হাজার ২৯৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩৯৪৫ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪৩৫৪ জন। এদিকে দেশে গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪ হাজার ৪৫০ জন রোগী। ভর্তি রোগীদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ ঢাকার বাইরে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ আগস্ট থেকে রোববার পর্যন্ত যত রোগী ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে ঢাকার বাইরে ৮ হাজার ৬৩৮ জন রোগী যা মোট ভর্তি রোগীর ৫৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এ সময় ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ৮১২ জন রোগী, যা ভর্তি রোগীর ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ। এ সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৭৪ জন মানুষের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে অধিদপ্তর।

এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুনে যেখানে পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আর আগস্টের ২৭ দিনে ৬২ হাজার ৬৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মাসের হিসাবে, জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন, জুন ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

মৃত্যুর তথ্যে দেখা যায়, জুনে দেশে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। জুলাইয়ে তা বেড়ে হয় ২০৪ জন। আগস্টের ২৭ দিনে আগের যে কোনো সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে, এ মাসে মৃত্যু হয়েছে ২৯৭ জনের। এর আগে জানুয়ারিতে ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এ্িপ্রলে ২ জন, মে মাসে ২ জন এবং জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে।

এ বছর এডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন। এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ বছরের আগে পর্যন্ত ছিল সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০