স্মরণীয়-বরণীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আবুল হোসেনের ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধরত অবস্থায় তিনি শহিদ হন। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।

আবুল হোসেনের জন্ম চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার লোহাগড়া গ্রামে। ১৯৭১ সালে ঢাকার পিলখানা ইপিআর হেডকোয়ার্টার্সে ঢাকা সেক্টরের অধীনে সিগন্যালম্যান হিসেবে তিনি কর্মরত ছিলেন। ২৫ মার্চ রাত ১২টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বালুচ রেজিমেন্ট পিলখানা ইপিআর হেডকোয়ার্টার্স আক্রমণ করে। এতে অনেক ইপিআর সদস্য শহিদ হন, অনেকে আহত হন। আবুল হোসেন সেদিন পিলখানা থেকে পালাতে সমর্থ হন। এরপর তিনি বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে মুন্সীগঞ্জ হয়ে নিজ এলাকায় যান। সেখানে তিনি পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেয়ার পর দুই নম্বর সেক্টরে যোগ দেন। পরে যুদ্ধে অংশ নেন নির্ভয়পুর সাব-সেক্টর, চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত হাসনাবাদে। ১৯৭১ সালের ২৮ আগস্ট পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে এক গেরিলা যুদ্ধে মো. আবুল হোসেন অংশগ্রহণ করেন। এই দলের অবস্থান ছিল হাজীগঞ্জে। দলনেতা ছিলেন জহিরুল হক পাঠান। তার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা সেদিন হাসনাবাদে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে অ্যামবুশ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি উপদলে ছিলেন আবুল হোসেন। ২৮ আগস্ট ভোরে তারা হাসনাবাদ বাজারের কাছে গোপনে অবস্থান নেন। সকাল ৯টায় মুক্তিযোদ্ধারা জানতে পারেন পাকিস্তানি শত্রুসেনারা তাদের অবস্থানের দিকে এগিয়ে আসছে। একটু পর তারা মানুষের চিৎকার ও গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান। এর পরপরই গুলি ছুড়তে ছুড়তে শত্রুসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের ভেতর ঢুকে পড়ে। তাদের সঙ্গে ছিল অনেক রাজাকার। ৪০-৫০ গজের মধ্যে আসামাত্র গর্জে উঠল সব মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র। মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা দিশাহারা। পাঁচ-সাত মিনিট মুক্তিযোদ্ধারা একতরফা আক্রমণ চালালেন। এরপর পাকিস্তানিরা পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তানি শত্রুসেনা ও রাজাকারদের ওপর আক্রমণ অব্যাহত রাখেন। আবুল হোসেনও সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছিলেন। যুদ্ধের একপর্যায়ে হঠাৎ গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি শহিদ হন। এই যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকার মিলে ৯-১০ জন নিহত ও অনেকে আহত হয়।

কাজী সালমা সুলতানা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০