নিজস্ব প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল-মিটিংসহ বিচারকাজে বিঘœ সৃষ্টিকারী যে কোনো কর্মসূচি-সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ আইনজীবীদের কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
গতকাল বুধবার বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত অবমাননার ওই আবেদনটি শুনানির জন্য বুধবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ১ নম্বরে ছিল। সকালে আদালত উঠে শুনানির দিন রাখে অবকাশকালীন ছুটির পর আগামী ১৯ অক্টোবর।
শুনানির পর অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত রায়ের নির্দেশনা কঠোরভাবে পালন করতে সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
২০০৫ সালের ওই নির্দেশনায় বলা ছিল, আদালত প্রাঙ্গণে মাইক ব্যবহার করা যাবে না, মিছিল-মিটিং
করা যাবে না।
‘ওই আদেশ অমান্য করে কোনো কাজ করলে আদালত অবমাননা হবে। অবমাননার বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের আদালতের কার্যক্রম থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিরত থাকবেন,’ বলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা বিএনপিপন্থি সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার ওই আবেদন করেন।
আবেদনের পক্ষে আদালতে ছিলেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যূথি। অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন।
শুনানির পর নাহিদ সুলতানা যূথি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিচারপতি এমএ মতিনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চের দেয়া রায়ের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে বলে বলেছেন আপিল বিভাগ। রায় অনুসারে আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ঘেরাও, পিকেটিং, সমাবেশ, অথবা এমন কোনো কাজ, যা বিচারকাজে বাধা প্রদান করে, তা করা যাবে না। আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ধরনের মিছিল-মিটিং ও পিকেটিং করা যাবে না। এ ছাড়া যারা আদালত অবমাননা করবে, তারা বাংলাদেশের কোনো আদালতে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়াতে পারবেন না বলে ওই রায়ে রয়েছে।’
যাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা হলেনÑজাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল।
গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বক্তব্য দেয়া দুই বিচারপতির অপসারণ চেয়ে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার তারা সমাবেশ করেন এবং পরে কালো পতাকা মিছিল করেন। মিছিলটি সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট দিয়ে বের হয়ে কদম ফোয়ারা হয়ে ঘুরে বার কাউন্সিলের পাশের গেট দিয়ে আবার আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে।