শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার গত মঙ্গলবার ঢিমেতালে লেনদেনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। চলতি সপ্তাহে অর্থনীতি নিয়ে কী প্রতিবেদন আসছে এবং টেক জায়ান্টগুলো কী বলছে তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে ওয়াল স্ট্রিট। এ কারণে দেশটির পুঁজিবাজারে গতি নেই বলে মনে করা হচ্ছে। খবর: এপি।
গত মঙ্গলবার দিনের শুরুতে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ বা ডাওয়ের পয়েন্ট কমে ৩০ শতাংশ বা শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। এতে সকাল ৯টি ৪০ মিনিটে তাদের পয়েন্ট ৩৪ হাজার ৬২৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। নাসডাক কম্পোজিটের সূচক কমে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।
অন্যদিকে প্রযুক্তি খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে সফটওয়্যার জায়ান্ট ওরাকল। প্রতিষ্ঠানটির শেষ প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার প্রযুুক্তি খাতের শেয়ারদর বাড়তে থাকে। যদিও বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসের তুলনায় ওরাকল কম মুনাফা করে। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ১১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
চলতি প্রান্তিকে ওরাকল কত রাজস্ব আয় করতে পারবে তা বিশ্লেষকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী পূরণ হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটি ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে। এজন্য তাদের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।
আরেক প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলের শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। আইফোনের নতুন সংস্করণ উম্মোচনের আগের দিন তাদের সূচক বৃদ্ধির খবর পাওয়া গেল। যুক্তরাষ্ট্রের চিপ নির্মাতা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান কোয়ালকমের সঙ্গে অ্যাপলের নতুন চুক্তির পর তাদের শেয়ারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৬ সাল পর্যন্ত অ্যাপলের জন্য ফাইভ-জি চিপ সরবরাহ করবে কোয়ালকম।
চলতি বছরে অ্যাপলের শেয়ারদর বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টে গুগলের বিরুদ্ধে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা চলমান, এ কারণে তাদের শেয়ারদর কমেছে। ১৯৯৮ সালে মাইক্রোসফটে নিয়ন্ত্রক সংস্থা অভিযুক্ত করার পর এটাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতে সবচেয়ে বড় মামলা। এর আগেও ২০২০ সালে গুগলের বিরুদ্ধে একই ধরনের মামলা করা হয়। গুগলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা প্রভাব খাটিয়েয় গ্রাহকদের নিজেদের সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারে বাধ্য করছে।
ওয়াল স্ট্রিটে মঙ্গলবার গেইনারের তালিকা ছিল তেল খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে উত্থান হয়েছে এই খাতে। এক্সন মোবিলের শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ২ দশমিক ১ শতাংশ। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকে অন্যতম শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে এর শেয়ারদর। ওক্সিডেন্টাল পেট্রোলিয়ামের শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ।
গত জুনের পর থেকে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর আগে এর দরপতন হচ্ছিল। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, অপরিশোধিত তেলের দাম ২ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮৯ ডলার ১২ সেন্ট হয়েছে। এছাড়া ব্রেন্ট ক্রডের দাম ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৯১ ডলার ৮১ সেন্ট হয়েছে।
মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডের নীতি সুদহার বৃদ্ধি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় তার কারণে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় পুঁজিবাজারে উত্থান-পতন কিংবা অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে। ফেড নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশের নিচে রাখার চেষ্টা করতে পারে। এছাড়া মন্দার আশঙ্কা রয়েছে।
বোফা গ্লোবাল রিসার্চের প্রতিবেদনে ইনভেস্টমেন্ট স্ট্রাটেজিস্ট মাইকেল হার্টনেট লিখেছেন, ১০ জন ফান্ড ম্যানেজারদের মধ্যে ছয়জন মনে করছেন ফেড সুদহার বৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া এশিয়ার বেশিরভাগ সূচক দুর্বল ছিল।
ইউরোপে মিশ্র ধারা দেখা গেছে। আগামী সপ্তাহে ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসিবি নীতি সুদহার বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।