প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নৌ-অ্যাম্বুলেন্স নদীতীরে পড়ে নষ্ট হচ্ছে

প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অযতœ আর অবহেলায় পড়ে আছে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার নৌ-অ্যাম্বুলেন্স। চরবাসীর জরুরি স্বাস্থ্যসেবার জন্য চার বছর আগে উপহার হিসেবে এ নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে এটি অচল হয়ে কলাপাড়া পৌর শহরের আন্ধারমানিক নদীর কিনারে পড়ে আছে।

ভেতরে ময়লা-আবর্জনা জমে এটি এখন নষ্ট হওয়ার পথে। অ্যাম্বুলেন্সটির আর প্রয়োজন নেই জানিয়ে কর্তৃপক্ষ এখন অন্য কোথাও হস্তান্তরের চেষ্টা করছে। আর এ নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের চালক থাকলেও তিনি হাসপাতালের নানা কাজে সময় পার করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সমুদ্র উপকূলের দূরবর্তী মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালে উপহার হিসেবে অ্যাম্বুলেন্সটি দেন। উপহার পাওয়ার প্রায় ৪ বছর অতিবাহিত হলেও সেটি এখনও ব্যবহার করা হয়নি। এটি নদীর জোয়ারে তলিয়ে থাকে আবার ভাটার সময় ভেসে থাকে। এটি রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

পরিবেশ নিয়ে কাজ করা উপজেলার চাপলী এলাকার বাসিন্দা কামরুল হাসান রনি বলেন, আমরা যারা উপজেলা শহর থেকে দুর্গম এলাকায় বাস করি তাদের জন্য এটা অতি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু গত ৪ বছরে কখনও এটিকে ব্যবহার করতে দেখিনি। এছাড়া কলাপাড়ার অভ্যন্তরীণ ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব খারাপ। সব এলাকার রাস্তা পাকা নয়, তাই বর্ষার সময় আমাদের এ অ্যাম্বুলেন্সটি দরকার।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কলাপাড়া জোনের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মাননু বলেন, এ নৌ-অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে রোগী পরিবহণ করা হয়নি কখনোই। এটা রোদ আর বৃষ্টিতে অকেজো হয়ে যাচ্ছে। শুকনো মৌসুমে উপজেলা বিভিন্ন স্থানে যাওয়া যায় কিন্তু বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় যেতে এখনও এ নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হয়। এছাড়া পার্শ্ববর্তী উপজেলা তালতলী থেকে অনেক রোগী কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা নিতে আসেন। তারাও এটার সেবা নিতে পারত।

তিনি আরও বলেন, এটা মূলত উপজেলার দুর্গম এলাকার মানুষকে জরুরি চিকিৎসা দেয়ার জন্য সরকার পাঠালেও স্বাস্থ্য বিভাগ কোনো প্রকার দেখভাল না করে ফেলে রেখে এখন এটাকে স্থানান্তরের চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষের সেবার মান বৃদ্ধি করতে এটি দেয়া হলেও বিন্দুমাত্র উপকারে আসেনি উল্টো সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিš§য় হাওলাদার জানান, ২০১৯ সালে আমরা এই নৌ-অ্যাম্বুলেন্সটি উপহার হিসেবে পাই। এরপরে বিভিন্ন কারণে ব্যবহার উপযোগী করতে পারিনি। বর্তমানে উপজেলার সব জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত। তাই এখন এটা ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। কোথাও কেউ অসুস্থ হলে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে তাকে বহন করে নিয়ে আসার আগেই রোগীরা এখন হাসপাতালে পৌঁছে যাচ্ছে। তাই এটা আর দরকার হয় না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এটাকে সারিয়ে অন্য কোথাও দেয়ার জন্য কয়েকবার বলা হয়েছে কিন্তু তারা এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

তিনি আরও বলেন, নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের একজন চালক রয়েছে। তিনি হাসপাতালে বিভিন্ন কাজের সহযোগিতা করছে। হাসপাতালের জনবল কম থাকায় বিদ্যুৎ, পানির লাইনসহ বিভিন্ন কাজ করে থাকেন তিনি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০