নির্বাচনের পর রোড-শো’র সুফল আসা শুরু হবে: বিএসইসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, আমরা বিভিন্ন দেশে রোড শো করে আমাদের কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং করার চেষ্টা করেছি। যার সুফল নির্বাচনের পরেই আসা শুরু হবে।

বিশ্ব বিনিয়োগ সপ্তাহ-২০২৩-এর উদ্বোধনী দিনে সভাপতির বক্তব্যে বিএসইসি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিনিয়োগ এখন বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরি। আমাদের দেশে এখন বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। বিনিয়োগের মাধ্যমে কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নকে আরও বেগবান করার সুযোগ রয়েছে। এজন্য আমাদের কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং দরকার ছিলো। আমরা বিভিন্ন দেশে রোড শো করে এটাই করতে চেষ্টা করেছি। এটা বিএসইসির দায়িত্ব না হওয়া সত্বেও আমরা দেশের স্বার্থে করেছি।

শিবলী আরও বলেন, ইতোমধ্যে বেশকিছু সাড়াও পাওয়া গেছে। সামনে জাতীয় নির্বাচনের পরে দেশে বেশ কিছু বড় বিনিয়োগ আসবে। আমার সঙ্গে এরইমধ্যে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী এখানে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের কাছেও বেশ কিছু বড় বিদেশি বিনিয়োগ আসার প্রস্তাব এসেছে। নির্বাচনের পরেই কান্ট্রি ব্যান্ডিংয়ের সুফল আসবে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগ এখন বাংলাদেশের জন্য খুবই জরুরি। আমাদের দেশে এখন বিনিয়োগের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। বিনিয়োগের মাধ্যমে কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নকে আরও বেগবান করার সুযোগ রয়েছে।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী কীভাবে আসবে? তারা তো ভাবে আমরা গরীব, মূর্খ, সাইক্লোন আক্রান্ত, বর্বর। তাহলে কেন বিদেশিরা এদেশে বিনিয়োগ করবে? তাদের এই ভুল ধারণা ভাঙানোর জন্যই আমরা কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং করেছি।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিনিয়োগ সপ্তাহে তাই আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে আরও স্মার্ট হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন স্মার্ট হতে। প্রতিটা কাজে, বিনিয়োগে ঝুঁকি যেভাবে বেড়েছে, স্মার্ট না হলে সেগুলো এড়িয়ে চলা যাবেনা।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে পরিকল্পনা হয় ৫ বছর মেয়াদি। পাকিস্তান ও ভারত ৫ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা হয়ে থাকে। বঙ্গবন্ধুও ৫ বছরের এই পরিকল্পনাকেই গুরুত্ব দেন। এক বছরের মাঝে সংবিধান তৈরি করেলেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনলেন ২০ বছরের স্ট্র্যাটেজি প্ল্যান, যা ২০২১ সাল থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত করা।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনা বাংলাদেশের। ঝড় ঝাপটা না হলে ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণ হবে বাংলাদেশের। এখন যে গতিতে এগোচ্ছে বাংলাদেশ এ গতি অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিনত হতে পারবে বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে কমিশনের কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিনিয়োগ সপ্তাহে এমন বেশ কিছু আয়োজন রয়েছে, যার মাঝে মানুষ এবং বিনিয়োগকারীরা অনেক কিছু জানতে পারবে এবং শিখতে পারবে। কিভাবে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহী এবং ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্যও থাকবে বিশেষ কিছু প্রোগ্রাম। আমরা ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে বিনিয়োগ শিক্ষা প্রোগ্রামের আয়োজন করে আসছি।

ড. শামসুদ্দিন আরও বলেন, অনিবন্ধিত এবং আনঅথরাইজড কেউ যেন মার্কেটে রোল প্লে না করতে পারে সে বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতেও বিনিয়োগ সপ্তাহে থাকবে বিশেষ আয়োজন। আমাদের কমিশন গভীরভাবে তথ্যপ্রযুক্তি কে কিভাবে ইতিবাচক দিকে কাজে লাগানো যায় তা পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

এসময় প্যানেল আলোচনা পরিচালনা করেন, কমিশনের নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান। প্যানেল আলোচনা পরিচালনাকালে সাইফুর রহমান বলেন, আইএসকোর এই ইনভেস্টর উইকের বিশেষ সব আয়োজনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা অনেক উপকৃত হবেন, পাশাপাশি পুঁজিবাজার নিয়ে আরও কি কি ইতিবাচক কাজ করা যেতে পারে তা সামনে আসবে।

প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, আইএসকোর এই ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টর উইকের যে ক্যাম্পিং আমরা করবো তার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা অনেক উপকৃত হবে বলে আমরা আশা করি।

বিএমবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আদি যুগ থেকেই মানুষের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে টিকে থাকা। যুগে যুগে মানুষের জীবন যাত্রা পরিবর্তন হয়েছে মানুষের। যারা বাজারের বাজে অবস্থার সময় ছিলো বা দায়ী ছিলো তারা হারিয়ে গেছে, কিন্তু বাজার কিন্তু টিকে আছে এখনও।

ডিবিএর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন বলেন, যার ইক্যুইটি মার্কেটে থাকতে হবে তার ডেপথ মার্কেটেও থাকা উচিৎ। বিএসইসি সবসময় চেষ্টা করছে ডেপথ মার্কেটকে দাড় করানোর জন্য। আর ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাসেট হিসেবে সারা পৃথিবীতে এর প্রচলন শুরু হয়েছে। তাই আমাদেরও ভাবতে হবে এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে শিখতে হবে, জানতে হবে। আর এখন থেকেই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এটা নিয়ে অ্যাওয়ারনেস শুরু করেছে, এটি বেশ ভালো একটি উদ্যোগ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সিআরও খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ বলেন, ডিএসইর মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেশ এবং দেশের বাইরে থেকে মার্কেটে লেনদেন করা সম্ভব। সারাবিশ্ব এখন অ্যাপ নির্ভর লেনদেন নির্ভর পুঁজিবাজার দেখছে। পাশাপাশি সার্কিট ব্রেকার, ফ্লোর প্রাইজ, মেন্যুপুলেশন প্রভৃতি সব বিষয়ে ডিএসই এবং বিএসইসি একসঙ্গে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০