প্রতিনিধি, নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জালিয়াতি চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় একটি নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স জব্দ করা হয়।
গতকাল শনিবার দুপুরের দিকে আসামিকে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার রাত ৮টায় চাটখিল পৌরসভা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আবদুল কাদের সৌরভ (৩০) চাটখিল পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের লামচর গ্রামের সর্দার বাড়ির মো. গোলাম মাওলার ছেলে। পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের নূর মোহাম্মদ (৩৫) হাঙ্গেরী যাওয়ার উদ্দেশ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে একলাশপুর ইউনিয়নের গাবুয়া বাজারে যান। সেখানে তার সহপাঠী ও বন্ধু মহরম আলীর সঙ্গে দেখা হয়। কথাবার্তার একপর্যায়ে তিনি জানান, তিন দিনের ভেতরে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করে দিতে পারবে। পরে নূর মোহাম্মদ সরল বিশ্বাসে তার নিজের ও তার ভাতিজা এবং এলাকার মসজিদের ইমাম আনোয়ার হোসেনের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বাবত ছয় হাজার ৮০০ টাকা প্রদান করেন। দু-তিন দিন পর আসামি পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের কপি সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠান। নূর মোহাম্মদসহ তার ভাতিজা ও এলাকার ইমাম সে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য ট্রাভেল এজেন্সিতে জমা দেন।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্সটি বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে মো. মুজাহিদুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার নোয়াখালী হিসেবে রামকৃষ্ণ সরকারের নাম, সিল ও স্বাক্ষর-সংবলিত ছিল। ৩ অক্টোবর ট্রাভেল এজেন্সি থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সগুলো নকল বলে জানায়।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামি ও পলাতক আসামি মহররম আলী দীর্ঘদিন থেকে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের সহায়তায় ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে বিভিন্ন থানা ও জেলার অফিসার ইনচার্জ, পুলিশ সুপার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তিত নাম ও সিল তৈরি করে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি করে আসছে। প্রতারক চক্র নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরির কাজটি এতটাই নিখুঁতভাবে করে যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সগুলো অনলাইনে থাকে, যার কারণে সহজে যে কেউ পুলিশ ক্লিয়ারেন্সগুলো নকল হিসেবে ধরতে পারে না।
বেগমগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা নেয়া হয়েছে।