গাজায়বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পণ্য সরবরাহ স্থগিত ইসরাইলের

শেয়ার বিজ ডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত শনিবার দিন গড়িয়ে রাতেও দফায় দফায় বিমান চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। অনেকটা অন্ধকার ও আতঙ্কে রাতটা পার করেছেন ফিলিস্তিনিরা। এ অবস্থার মধ্যে গাজায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পণ্য সরবরাহ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইলের নিরাপত্তা পরিষদ। খবর: আল জাজিরা।

বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদ জানিয়েছে, গাজায় হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ইসরাইলের ওপর মিসর ও সিরিয়ার আকস্মিক হামলার মধ্য দিয়ে ১৯৭৩ সালে চতুর্থ আরব-ইসরাইল যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। গত শনিবার ইসরাইলের ওপর ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বড় ধরনের হামলাকে কেন্দ্র করে ৫০ বছর পর আগের সে পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০২১ সালে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের পর মিসর, কাতার ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের পরোক্ষ আলোচনা হয়। তখন হাজারো গাজাবাসীকে ইসরাইলে কাজ করার অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে সমঝোতা হয়। আরও কিছু কড়াকড়িও শিথিল করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর গত সেপ্টেম্বরে ইসরাইল সীমান্তে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভ কেন্দ্র করে গাজার কর্মীদের জন্য দুই সপ্তাহ সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়।

প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির বসবাস অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায়। ২০০৭ সাল থেকে উপত্যকাটিতে স্থল ও জলপথে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে ইসরাইলি সরকার। ফলে আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর অনেকটা নির্ভর করে চলতে হয় এখানকার বাসিন্দাদের। এমন বাস্তবতায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহ স্থগিত করলে চরম মানবিক পরিস্থিতি দেখা দেবে।

শনিবার এ ভূখণ্ড থেকে ইসরাইলের সীমান্ত এলাকাগুলো লক্ষ্য করে কমপক্ষে ৫ হাজারের মতো রকেট ছুড়ে হামাস। এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। পাল্টা বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। বিমান হামলায় গাজায় ৪৪০ জনের বেশি হামাস সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ইসরাইলে অন্তত ৬০০ জন নিহত হয়েছেন। এই সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার কথা। হাজারো মানুষ হাসপাতালে ভর্তি।

গাজার সীমান্ত এলাকার কাটাতার ভেঙে ইসরাইলে ঢুকে পড়েছে হামাসের শত শত সশস্ত্র যোদ্ধা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে তারা লড়াই করছে। একাধিক ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা ও নাগরিককে জিম্মি করার দাবি করেছে হামাস। ইসরাইলি কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তিপণ হিসেবে তাদের ছেড়ে দেয়ার কথা বলছে গোষ্ঠীটি।

এ পরিস্থিতিতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার দেশের জনগণের উদ্দেশে বলেছেন, ইসরাইল একটা দীর্ঘ ও কঠিন যুদ্ধে প্রবেশ করেছে। ইসরাইলের ওপর জঘন্যভাবে একটি যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে হামাস। তিনি আরও বলেন, ইসরাইলি ভূখণ্ডে থাকা বেশিরভাগ জঙ্গিরা আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আর এর মধ্যে দিয়ে যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ের সমাপ্তি ঘটবে।

এরপর লেবানন থেকে ইসরাইলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি লেবানন থেকে ছোড়া মর্টার শেল আঘাত হেনেছে ইসরাইলের সামরিক স্থাপনায়। ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, লেবাননের যেখান থেকে এসব গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে সেই এলাকায় পাল্টা আর্টিলারি হামলা চালাচ্ছে তারা। এতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনী (আইডিএফ) বর্তমানে লেবাননের সেই এলাকায় আক্রমণ করছে যেখান থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়েছিল।  আইডিএফ এই ধরনের আক্রমণের জন্য প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুরো অঞ্চলে এবং প্রয়োজনে যে কোনো সময়ে কাজ চালিয়ে যাবে।

ইসরাইলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের কাফার শুবার আশপাশের এলাকা লক্ষ্য করে আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে। তবে লেবাননের পক্ষে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০