ক্রেতা নেই আড়াইশ কোম্পানির

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ খরা চলছে। এ কারণে গতকাল সোমবার আরও দরপতন দেখলেন বিনিয়োগকারীরা। কার্যত এদিন আড়াইশর বেশি কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতা ছিল না।

গতকাল সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স আরও ৭ পয়েন্ট কমেছে। সূচক এখন ৬ হাজার ২২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে, যা গত ১৬ আগস্টের পর সর্বনি¤œ। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ২২০ পয়েন্ট।

ডিএসসিতে তালিকাভুক্ত ৩৯২টি কোম্পানির মধ্যে এদিন ২৮৩টি কোম্পানির শেয়ার হাতবদল হয়েছে। বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে তিনটির লেনদেন বন্ধ আর ১০৬টির একটি শেয়ারও হাতবদল হয়নি।

সোমবার ডিএসইতে ৮৪টি কোম্পানির এক লাখের বেশি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। ১০ হাজারের বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫৪টি কোম্পানির। ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ড, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রকৌশল আর সবচেয়ে বেশিসংখ্যক কোম্পানি বস্ত্র খাতের বিপুলসংখ্যক কোম্পানির শেয়ারে কোনো ক্রেতা ছিল না।

তবে এই চিত্রের মধ্যেও সার্বিকভাবে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। সারাদিনে ডিএসইতে হাতবদল হয়েছে ৪২৬ কোটি ১০ লাখ ১২ হাজার টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন ছিল ৩৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকার।

এদিকে ফ্লোর প্রাইস দিয়ে প্রতিটি শেয়ারের সর্বনি¤œ মূল্য বেঁধে দেয়া হলেও ঠেকানো যাচ্ছে না সূচকের পতন। সর্বনি¤œ দরেও বিপুলসংখ্যক শেয়ারের ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিন ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে বেশি থাকা ১০৭টি কোম্পানি দর হারিয়েছে। বিপরীতে বেড়েছে ২৯টির। আগের দিন ১২টি কোম্পানির দর বেড়েছিল, কমেছিল ১৫৪টির দর। ফ্লোর প্রাইসে আগের দিন রোববারের দরে লেনদেন হওয়া কোম্পানির সংখ্যা ১৪৭টি।

গত কয়েক মাসে যেসব কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ছাড়িয়ে গিয়েছিল, টানা দরপতনের কারণে সেগুলো আবার ফ্লোরে ফিরে আসছে। ৯ মাসের বেশি সময় ফ্লোর প্রাইস ২৫ টাকা ২০ পয়সায় আটকে থাকা রূপালী ব্যাংক গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে হঠাৎ ফ্লোর ছেড়ে বেরিয়ে আসে। ২৬ জুলাই দর দাঁড়ায় ৩৬ টাকা ৪০ পয়সায়। সেই কোম্পানির শেয়ারদর হারিয়ে ফ্লোরের কাছাকাছি নেমে এসেছে। গতকাল ১০ পয়সা বাড়লেও দর দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৫০ পয়সায়, যা তার ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে কেবল ৩০ পয়সা বেশি।

সাধারণ বিমা খাতের স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স গত ৫ সেপ্টেম্বর তার ফ্লোর প্রাইস ৪৩ টাকা ৩০ পয়সা ছাড়ায়। দর দ্রুতই ৫৮ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এখন উল্টো দৌড়ে দর স্থির হয়েছে ৪৩ টাকা ৯০ পয়সায়। আর ৬০ পয়সা কমলেই সেটি ফ্লোর ছুঁয়ে ফেলবে।

আরও অনেক কোম্পানিই ফ্লোর প্রাইসে ফিরে এসেছে। মৌলভিত্তি দুর্বল থাকলেও লাফাতে লাফাতে দাম বাড়তে থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর আরও দ্রুত কমছে।

গতকাল মৌলভিত্তি শক্তিশালী নয়, কোম্পানির ব্যবসার প্রবৃদ্ধি নেই, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও ঘোষণায় নেই, এমন কিছু কোম্পানিকে আবার দর বৃদ্ধির শীর্ষে দেখা গেছে। এদিন শেয়ারপ্রতি ২৫ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণার পর লাফ দেয়া দেশবন্ধু পলিমার আবার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে। কেবল ২৫ কর্মদিবসে দর ২২ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ওঠে গেছে ৩১ টাকায়। গতকাল বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ।

দুই বছর ধরে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করা লোকসানি কোম্পানি লিবরা ইনফিউশনের শেয়ারদর আরও বেড়ে ছাড়িয়ে গেছে এক হাজার টাকা। দর বেড়েছে ৬ শতাংশের বেশি। এছাড়া লোকসানি ইমাম বাটন ও ইনটেক অনলাইন এদিনও ছিল দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায়।

লেনদেনের হিসাবে এদিনও অন্য সব খাতকে ছাড়িয়ে গেছে সাধারণ বিমা। তবে আগের দিনের চেয়ে কমেছে হিস্যা। আগের দিন মোট লেনদেনের প্রায় ২৫ শতাংশ হয়েছিল এই খাতে। এদিন তা কমে ১৬ শতাংশে নেমেছে।

আগের তিন ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছিল ৪০টি, এদিন দর হারিয়েছে আরও ৩০টি। আটটি আগের দিনের দরে লেনদেন হয়েছে, যেগুলোর প্রায় সবই রয়েছে ফ্লোর প্রাইসে। চারটির দর কিছুটা বেড়েছে।

জীবন বীমা খাতের ১৫টি কোম্পানির মধ্যে লেনদেন হয়নি চারটির। বাকিগুলোর মধ্যে দর হারিয়েছে ৭টি, চারটি হাতবদল হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০