ব্যাটিং ব্যর্থতায় টানা হার বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক: বিশ্বকাপে চলছে রান উৎসব। এখন পর্যন্ত ৪০০-এর ওপরেও স্কোর হয়েছে একবার। তিনশ পার হওয়া স্কোরও হয়েছে ৬ বার। আছে আরও কিছু বড় ইনিংস। তবে এসবের মাঝে যেন ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। ওপেনিং বা ওয়ানডাউনের চিরচেনা রোগ তো আছেই। সেই রোগের ধারবাহিকতায় শুরু কিউদের বিপক্ষে ম্যাচেও। চেন্নাইয়ে টস জিতে প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। বরাবরের মতো শুরুতেই ধাক্কা। ট্রেন্ট বোল্টের বলে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। আগের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরির পর এবার গোল্ডেন ডাকে (১ বলে ০) সাজঘরে টাইগার ওপেনার। শেষে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে বাংলাদেশ তুলেছে ২৪৫ রান। এ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ডকে পথ দেখিয়েছিলেন কনওয়ে-উইলিয়ামসন জুটি। দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে তোলেন ৮০ রান। এরপর ড্যারিল মিচেলকে সঙ্গে নিয়ে ১০০ রানের জুটি গড়েছেন কিউই অধিনায়ক। এর মধ্যে মিচেলও ব্যক্তিগত অর্ধশতক পেয়ে গেছেন। সাকিবকে ছয় হাঁকিয়ে মিচেল শুরুটা করেছিলেন, এরপর তাল মিলিয়ে খেলেছেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে। ফিফটি পেতে মিচেল ৪৫ বল খেলেছেন। পায়ে ক্র্যাম্প নিয়েও টাইগার অধিনায়ক সাকিব ১০ ওভারে ৫৪ রানে ১ উইকেট নেন। এরপর মাঠ ছেড়ে যান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। দলীয় রান ২০০ ছুঁতেই রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়লেন কেন উইলিয়ামসন। ৭৮ রানে খেলছিলেন তিনি। বৃদ্ধাঙ্গুলিতে অস্বস্তিবোধ করতে দেখা গেছে তাকে। ১০৭ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংস। মিচেলের সঙ্গে উইলিয়ামসনের জুটি ছিল ১০৮ রানের। এতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি নিউজিল্যান্ডকে। ৪২.৫ ওভারে ৮ উইকেটে জয়ের দেখা পায় তারা। মিচেল ৬৭ বলে অপরাজিত ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন।

তার আগে চেন্নাইয়ে টস জিতে প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। বরাবরের মতো শুরুতেই ধাক্কা। ট্রেন্ট বোল্টের বলে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। আগের ম্যাচে হাফসেঞ্চুরির পর এবার গোল্ডেন ডাকে (১ বলে ০) সাজঘরে টাইগার ওপেনার।

তরুণ তানজিদ হাসান তামিমও বড় মঞ্চে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারছেন না। আজ সেট হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি। লুকি ফার্গুসনের বলে স্কয়ার লেগে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তামিম (১৭ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ১৬)। মেহেদী হাসান মিরাজ তিন নম্বরে নেমে বেশ রানের গতি সচল করেছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ৩০ রানে তিনিও ভুল করে বসেন। ফার্গুসনকে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। ৪৬ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকান ৪টি বাউন্ডারি। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হয়েছেন সহজ এক বলে। গ্লেন ফিলিপস নিজেও হয়তো আশা করেননি এমন বলে উইকেট পেয়ে যাবেন। আলতো করে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে পথে হাঁটেন শান্ত (৮ বলে ৭)। ১৩ ওভার না যেতেই ৫৬ রানেই নেই ৪ উইকেট। সেই ব্যাটিং বিপর্যয়, সেই পুরোনো চেহারায় বাংলাদেশ। দলের এই বিপর্যয়ের মুখে হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিম। ২১ ওভারে দলীয় সংগ্রহ ১০০ ছোঁয় টাইগাররা। মুশফিক-সাকিবের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ। তবে পঞ্চম উইকেটে ১০৮ বলে তাদের ৯৬ রানের জুটিটি অবশেষে ভেঙে দেন লুকি ফার্গুসন। ৩০তম ওভারের চতুর্থ ফার্গুসনকে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন সাকিব। পরের বলে আবার চড়াও হতে দিয়ে ভুল করে বসেন টাইগার অধিনায়ক। বাউন্সারে পরাস্ত হয়ে তুলে বল তুলে দেন আকাশে। ৫১ বলে সাকিবের ৪০ রানের ইনিংসে ছিল ৩টি চার আর ২টি ছক্কার মার।

মুশফিক দারুণ খেলছিলেন। দলের বিপদে আরও একবার জ্বলে উঠেছিল মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিমের ব্যাট। দেখেশুনে খেলেন, তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৮তম হাফসেঞ্চুরি। আশা জেগেছিল সেঞ্চুরির। কিন্তু মুশফিক পারলেন না। ম্যাট হেনরির সেøায়ার ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত হয়ে বোল্ড হলেন টাইগার উইকেটরক্ষক। তার ৭৫ বলে ৬৬ রানের ইনিংসটি ছিল ৬ চার আর ২ ছক্কায় সাজানো। এরপর তাওহিদ হƒদয়ও সাজঘরে ফিরে গেছেন ২৫ বলে ১৩ রান করে। ট্রেন্ট বোল্টের নাকল বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে শর্ট এক্সট্রা কভারে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

৪ উইকেটে ১৫২ থেকে ১৮০ তুলতে ৭ উইকেট হারিয়ে ফের চাপে পড়ে বাংলাদেশ। অষ্টম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর তাসকিন আহমেদ মিলে ৪৩ বলে যোগ করেন মূল্যবান ৩৪ রান। ১৯ বলে ২ ছক্কায় তাসকিনের ১৭ করে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। তবে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ বাকি সময় বলতে গেলে একাই টেনে নিয়ে গেছেন দলকে। ৪৯ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৯ উইকেটে বাংলাদেশ তুলেছে ২৪৫ রান।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০