ভোক্তার কাছে প্রতিনিয়ত সস্তা হচ্ছে তামাকজাত দ্রব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাস্থ্য উন্নয়নে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সারচার্জ আরোপ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। গতকাল মঙ্গলবার ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের উদ্যোগে ‘তামাকের মূল্যবৃদ্ধি বৈষম্য ও জনস্বাস্থ্যে প্রভাব’Ñশীর্ষক জুম ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। সভায় বক্তারা বলেন, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় সত্ত্বেও গত ৭ বছরে একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি চূড়ান্ত না হওয়ার কারণে তামাক নিয়ন্ত্রণে এখনও আশানুরূপ সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।

ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রোমানা হক, আইসিডিডিআর.বির অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট ড. শেহরীন শায়লা মাহমুদ, এফ এ এম কনসাল্টিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানা। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য। তিনি তার প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বিগত ৫ বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির বৈষম্য তুলে ধরেন।

অধ্যাপক ড. রোমানা হক বলেন, তামাকের কর কাঠামোর সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিয়ে কোম্পানিগুলো বিশাল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সুনির্দিষ্ট কর আরোপ ও শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর তদারকি প্রয়োজন। গতানুগতিক মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া তামাক নিয়ন্ত্রণে আশানুরূপ ভূমিকা রাখছে না। তিনি ধোঁয়াবিহীন ও ধোঁয়াযুক্ত তামাকজাত দ্রব্যের জন্য স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং সিস্টেম চালু করার পাশাপাশি কর আদায় ব্যবস্থা আধুনিকায়নের জোর দাবি জানান। পরিশেষে তিনি তামাকের রাজস্বের ওপর অতি-নির্ভরশীলতা কমিয়ে রাজস্ব আয়ের জন্য বিকল্প মাধ্যম খুঁজে বের করার প্রতি আলোকপাত করেন।

ডা. শেহরীন শায়লা মাহমুদ বলেন, তামাক কোম্পানি স্বার্থ এবং সরকারের উদ্দেশ্য পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। রাজস্ব আয়, তামাক চাষে অধিক মুনাফাসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে কোম্পানিগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিতে অযাচিত হস্তক্ষেপের চেষ্টা করে। তিনি তামাকের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খুচরা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ ও এই বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

আবিদা সুলতানা বলেন, তামাকের দাম বাড়ানো হলেও ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট সুবিধা এবং শুল্কবিহীন আমদানির সুযোগে কোম্পানির মুনাফা বছর বছর বেড়েই চলেছে। বিশ্বে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও মূল্য বৃদ্ধির বিপরীতে তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণের হার নির্ণয়ে প্রয়োজনীয় গবেষণা প্রয়োজন। তিনি তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তামাক চাষ ও উৎপাদনের পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়মনীতি প্রয়োগের বিষয়ে আলোকপাত করেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০