নীলফামারীতে জমে উঠেছে পূজার কেনাকাটা

প্রতিনিধি, নীলফামারী: নীলফামারীতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন বাজারে জমে উঠেছে পূজার কেনাকাটা। প্রতি বছরই দুর্গাপূজাকে ঘিরে শপিংমলগুলোতে থাকে বেচাকেনার বাড়তি চাপ। এবারও তার ব্যতিক্রম ছিল না। দোকানগুলো সাজানো হয়েছে ঝাড়বাতি দিয়ে।

অনেকেই এরই মধ্যে কেনাকাটা সেরেছেন পরিবারের। আবার অনেকেই আসছেন নতুন করে কিনতে। কেউবা আসছেন টুকিটাকি বাজার করার জন্য। তবে আজ মহাষষ্ঠীর দিনে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে শাড়ি, থ্রি-পিচ কসমেটিকস, জুতা, সেন্ডেল ও কসমেটিকস।

জেলা শহরের নিউ বাবুপাড়ার সুধির চন্দ্র রায় জানান, ‘জিনিসপত্রের যা দাম তা আমাদের মতো গরিব মানুষের পূজায় কাপড়চোপড় করা খুবই কঠিন। পাঁচ সদস্যের পরিবারে আমি একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। সামান্য আয়ে আমার সংসার চলে। এরপরেও যা না কিনলেই নয়, নাতনির জন্য থ্রি-পিচ, নাতির জন্য রেডিমেট শার্ট প্যান্ট ও স্ত্রীর জন্য সাড়ে ৫০০ টাকা দামে একটি শাড়ি কিনেছি, আর আমার জন্য শুধু একটি ফতুয়া নিয়েছি।’
শুক্রবার বিকালে জেলা শহরের মকবুল হোসেন সুপার মার্কেট, পৌর সুপার মার্কেট, মুরাদ আলী প্লাজা, হাজী মহসিন সড়কের এবাদত প্লাজা, রকস্ িক্লোথ স্টোর, চন্দন ক্লোথ স্টোর ও বড় বাজারসহ কয়েকটি মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এসব মার্কেটে রয়েছে স্পেশাল ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্ট, জামদানি শাড়ি, সিল্ক শাড়ি, সুতি শাড়িসহ কসমেটিকস এবং জুতা সেন্ডেল। এগুলো ১৫০০ টাকা থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে।

বড় বাজারের কাপড় দোকানদার ও স্মৃতি গার্মেন্টসের মালিক মকবুল হোসেন জানান, ‘আমরা কিছু চমৎকার ডিজাইনের পাঞ্জাবি রেখেছি। এসব পাঞ্জাবি ১৭০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে ছেলে ও বাবার একই রঙের পাঞ্জাবি রয়েছে। তিনি বলেন, বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আশা করি, এবার পূজায় বেচাকেনা করে কিছু লাভ করা যাবে। আবার নরমাল এসব পণ্য ১ হাজার টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে।’

একই বাজারের কাটা কাপড়ের দোকানদার মনোয়ার হোসেন জানান, ‘বিভিন্ন দামের কাটা কাপড়সহ শাড়ি, থ্রি-পিচ, শালোয়ার, কামিজ ও ওড়না সাধ্যের মধ্যে ক্রেতারা কিনতে পেরে বেজায় খুশি। গত বছরের চেয়ে এবার পূজায় বেচাকেনা ভালো হচ্ছে এবং ক্রেতাদের চাহিদার কথা চিন্তা করে এসব পণ্য রেখেছি। নতুন নতুন কিছু শাড়ি, ব্লাউজ পিচ ও কাটা কাপড় এনেছি।’

চন্দন বস্ত্রলায়ের মালিক তুলশী কুমার কুন্ডু জানান, ‘মহাষষ্ঠীতে মায়ের পূজা উপলক্ষে বিশেষ ছাড়ে কটন, মস্লিন শাড়ি, হাফ সিল্ক ফতুয়া, বাচ্চাদের ম্যাচিং সেট ও বড় বাচ্চাদের বিভিন্ন রংয়ের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে ৩০০০ টাকা থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকার মধ্যে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূজা উপলক্ষে মকবুল হোসেন সুপার মার্কেটে শাড়ি কিনতে আসা এক নারী ক্রেতা বলেন, ‘অনেক কিছুই কেনাকাটা করেছি পরিবারের জন্য। আমারটা বাকি ছিল সেটা আজ কিনতে এসেছি। দরদামের বিষয়ে তিনি বলেন, দাম একটু বেশি তারপরেও চেষ্টা করছি সাধ্যের মধ্যে কিনতে।’

একই মার্কেটে কথা হয় নিউ বাবুপাড়ার নারী ক্রেতা কৃষ্ণা রায় জানান, ‘বর্তমানে চাল, ডাল,চিনি, সোয়াবিন, আটা, ময়দা ও সবজিসহ কাপড়ের বাজার আকাশচুম্বী। তারপরেও দুর্গা উৎসবে ছেলে, মেয়ে ও পরিবারের সদস্যদের কেনাকাটা সেরে নিচ্ছি।’

ওই বাজারের জুতার দোকানদার লেবু মিয়া জানায়, ‘এবার পূজায় গত বছরের তুলনায় ক্রেতা একটু কম। পূজার কথা চিন্তা করে মোকাম থেকে লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন কোয়ালিটির জুতা, সেন্ডেল ও মেয়েদের পাম্পসু আমদানি করেছি। কিন্তু সেই অনুযায়ী তেমন বিক্রি হচ্ছে না। জুতার দাম খুব একটা বাড়েনি। তবে বিভিন্ন ধরনের জুতা সেন্ডেল পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা দামের মধ্যে। কারুকাজ করা মেয়েদের পাম্পসু পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ টাকায়।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০