শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যখন চরম উত্তেজনা, ঠিক তখনই সিরিয়ায় বিমান হামলা চালালো যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন জানিয়েছে, গোটা অঞ্চলে মার্কিন সৈন্যদের উপর লাগাতার হামলার প্রতিশোধ নিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খবর: ডয়চে ভেলে।
মধ্যপ্রাচ্য সংকট যে শুধু ইসরায়েল ও হামাসের সংঘর্ষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না, তা একাধিক ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ইসরায়েলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের চিরশত্রু ইরানের মধ্যেও পরোক্ষ সংঘাত বেড়ে চলেছে। গোটা অঞ্চলজুড়ে ইরানের মদতপূষ্ট শক্তির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্টের তৎপরতা বাড়ছে। হামাস ছাড়াও ইসলামি জেহাদ ও হিজবুল্লাহর মতো গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। বর্তমান উত্তেজনার শুরুতেই সম্ভবত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের দিকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর মার্কিন রণতরি সেগুলি ধ্বংস করেছিল। এবার সিরিয়ায়ও দুই শক্তির মধ্যে হিংসাত্মক মোকাবিলা ঘটছে।
শুক্রবার ভোরে মার্কিন যুদ্ধবিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদ বোঝাই দুটি স্থাপনার উপর হামলা চালিয়েছে। বুকামালের কাছে দুটি মার্কিন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সুনির্দিষ্ট আঘাত করেছে। ইরানের রেভোলিউশনরি গার্ড কপস ও সে দেশের মদতপূষ্ট মিলিশিয়া বাহিনী সেগুলি চালায় বলে ওয়াশিংটন দাবি করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বয়ং সেই হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আল খামেনেই-কে এক বিরল বার্তা পাঠিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী ইরানের ‘প্রক্সি’ শক্তি মার্কিন লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা চালিয়ে গেলে আরো এমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, শুধু গত সপ্তাহেই ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন ও কোয়ালিশন বাহিনীর সৈন্যদের উপর কমপক্ষে ১৯টি হামলা চালানো হয়েছে।
ইরান কার্যত এমন হামলার দায় স্বীকার করে নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরআব্দোল্লাহিয়ান বলেন, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযান বন্ধ না হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও সেই আগুন থেকে রেহাই দেওয়া হবে না। ওয়াশিংটনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ইরান ও তার মদতপূষ্ট গোষ্ঠীগুলি ইসরায়েল ও মার্কিন লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলা চালিয়ে যাবে কিনা, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেন নি।
ইসরায়েল গাজার উপর বোমাবর্ষণ চালিয়ে গেলে অথবা সেখানে সৈন্য পাঠালে আরো বড় আকারের আঞ্চলিক সংকটের আশঙ্কা বাড়ছে। বাইরে থেকে হামলার মুখে শুধু লেবাননের হিজবুল্লাহর ঘাঁটি নয়, সিরিয়ায় সামরিক স্থাপনার উপরেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ফলে অনেক আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তি ইরানের সঙ্গে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট সরাসরি সংঘাতের আশঙ্কা করছে।