শেয়ার বিজ ডেস্ক: ফিলিস্তিনের গাজা ভ‚খণ্ডে ইসরায়েলি হামলার বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, তুরস্ক, জার্মানি, ইতালি, সেনেগালসহ অনেক দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার বিরোধিতা এবং অবিলম্বে অস্ত্রবিরতির দাবি জানানো হয়। খবর: বিবিসি ও আল জাজিরা।
আগামীকাল এই হামলার এক মাস পূর্ণ হবে। হামলায় নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন সাড়ে ৯ হাজার ফিলিস্তিনি।
গাজায় যুদ্ধবিরতির আহŸান জানিয়ে এবং ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার মানুষ সমাবেশে অংশ নেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির হোয়াইট হাউসের কাছে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় কেউ কেউ ইসরায়েলের প্রতি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সমর্থনের সমালোচনা করেন। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনি পতাকা ও প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এসব প্ল্যাকার্ডে ‘প্যালেস্টানিয়ান লাইভস ম্যাটার’ এবং ‘এখনই গাজা অবরোধ অবসান ঘটান’Ñএর মতো সেøাগান লেখা ছিল।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী যুক্তরাজ্যের কয়েক ডজন নগর ও শহরে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন। এর মধ্যে কেবল লন্ডনেই ফিলিস্তিনের পক্ষে সমাবেশে ৩০ হাজার বিক্ষোভকারী অংশ নেন বলে মেট্রোপলিটন পুলিশ অনুমান করছে। এছাড়া এডিনবার্গ এবং গøাসগো রেল স্টেশনে ও লন্ডনের চ্যারিং ক্রসে বিক্ষোভকারীরা যাত্রীদের ট্রেনে চড়তে বাধা দেয়ার জন্য মেঝেতে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। লন্ডনে জাতিগত বিদ্বেষ ও উসকানিসহ বিভিন্ন অপরাধের জন্য ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ব্যানারে সেøাগান লেখার ঘটনায় সন্ত্রাস আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমনকি বিক্ষোভে বক্তৃতার সময় ইহুদিবিদ্বেষী মন্তব্য করার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের অন্যান্য শহরের মধ্যে ম্যানচেস্টার, বেলফাস্ট, কার্ডিফ, লিভারপুল এবং লিডসেও ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ হয়েছে ফ্রান্সেও। ইসরায়েলের চলমান হামলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নামেন। প্যারিস, টুলুস এবং লিয়নসহ অন্য শহরগুলোয় ফিলিস্তিনের সমর্থনে বিক্ষোভকারীরা মিছিল করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা প্যারিসকে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেয়ার আহŸান জানান। রিপাবলিক স্কোয়ার থেকে শুরু হওয়া প্যারিসের বিশাল পদযাত্রা নেশন স্কোয়ারে গিয়ে শেষ হয়। এদিনের বিক্ষোভে লা ফ্রান্স ইনসুমিস নামে একটি বামপন্থি পপুলিস্ট রাজনৈতিক দলের সদস্যসহ কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী পদযাত্রায় অংশ নেন।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরোধিতা এবং ফিলিস্তিনের সমর্থনে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে পুলিশের কঠোর শর্ত মেনে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বিক্ষোভকারী বিক্ষোভের জন্য জড়ো হন। এর আগে ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছিল জার্মান সরকার। বিক্ষোভের সময় ফিলিস্তিনি পতাকা এবং ‘গাজায় গণহত্যা বন্ধ করুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহনকারী বিক্ষোভকারীরা শহরের কেন্দ্রস্থলের প্রধান চত্বর আলেকজান্ডারপ্লাটজে জড়ো হন।
ইতালিতে প্রায় ৪ হাজার বিক্ষোভকারী গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে মিলানের রাস্তায় মিছিল করেন। ‘যুদ্ধ বন্ধ করুন, বর্ণবাদ নয়’ ¯স্লোগানের দিয়ে এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
সেনেগালের রাজধানী ডাকারে অনেক মানুষ প্ল্যাকার্ড এবং ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এই বিক্ষোভটি গত সপ্তাহে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সে সময় এটি নিষিদ্ধ করা হয়।
গাজা নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিøংকেনের তুরস্ক সফরের একদিন আগে ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারায় শত শত বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। ইস্তাম্বুলের সারাচানে পার্কে আয়োজিত বিক্ষোভে ব্যানারে লেখা ছিল, ‘বিøংকেন, গণহত্যার সহযোগী, তুরস্ক থেকে চলে যাও’। এছাড়া কয়েকটি ব্যানারে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়াামিন নেতানিয়াহু এবং বিøংকেনের এক সঙ্গে লাল ‘ক্রস’ চিহ্ন সম্বলিত ছবিও দেখা যায়। রাজধানী আঙ্কারায় বিক্ষোভকারীরা মার্কিন দূতাবাসের কাছে সমাবেশ করেন এবং সেøাগান দেন। এ সময় তাদের পোস্টারে লেখা ছিল, ‘ইসরায়েল হাসপাতালে বোমা নিক্ষেপ করছে, এর জন্য অর্থ দিচ্ছে বাইডেন।’