নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলন করার মতো ‘শক্তি নেই’ বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ কারণেই তারা ‘বরাবরের মতো অগ্নিসন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপির ডাকা তৃতীয় দফা অবরোধের প্রথম দিন গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা।
আন্দোলনে ‘ব্যর্থ হয়েও’ বিএনপি ‘মিথ্যাচারের ধারা’ অব্যাহত রেখেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি বিএনপির গণতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন করার শক্তি ও সামর্থ্য নেই বলেই তারা বরাবরের মতো অগ্নিসন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।
‘২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের ন্যায় অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্দয় আগুনের লেলিহান শিখায় পোড়াচ্ছে সারাদেশ; মেতে উঠেছে নির্বিচার ভাঙচুর ও সহিংসতায়। অগ্নিসন্ত্রাস, সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করা, মানুষ হত্যা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগের মতো ধ্বংসাত্মক অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি।’
বিএনপির ‘অগ্নিসন্ত্রাস’ থেকে জীবন্ত ও ঘুমন্ত মানুষ, নারী ও শিশু কেউই রেহাই পাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নামে বিএনপি লাশের রাজনীতি করছে।
জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, জনগণের নিরাপত্তা সুরক্ষায় সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। বিএনপি নেতারা ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের নামে ‘মিথ্যা, অপপ্রচার ও গুজব’ সৃষ্টি করে নেতাকর্মীদের ‘সন্ত্রাস করার’ নির্দেশনা দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন কাদের। গ্রেপ্তার ও ‘গুমের’ মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপনের অভিযোগও আনেন তিনি।
বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রতিদিনই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে আগুনের ঘটনা ঘটছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কেবল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদেরই গ্রেপ্তার করছে দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী আত্মগোপনে থাকলে, তার দায় সরকারের ওপর চাপানো যায় না। আওয়ামী লীগ কখনও গুম, খুন, অগ্নিসন্ত্রাস ও বিরোধী দল দমনের রাজনীতি করে না। গুম, খুন, সন্ত্রাসের রাজনীতি হলো বিএনপির মজ্জাগত আদর্শ।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান এ দেশে ‘গুম ও খুনের অপরাজনীতির’ প্রচলন করেছিল বলেও অভিযোগ করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘তৎকালীন সময়ে ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ বাবুকে গুমের মধ্য দিয়ে এই ধারার সূচনা করে বিএনপি। সামরিক স্বৈরশাসক’ জিয়া ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগের দেড় শতাধিক সংসদ সদস্যদকে কারাগারে বন্দি রেখে নির্বাচন আয়োজন এবং আওয়ামী লীগের অর্ধশতাধিক সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের প্রার্থিতা বাতিল করেছিল বলেও জানান তিনি।’
আওয়ামী লীগ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক শাসনব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির যে কোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত এবং সন্ত্রাস, নাশকতা, নৈরাজ্য ও গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমরা বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন-সমৃদ্ধির চলমান অগ্রগতিকে যে কোনো মূল্যে সমুন্নত রাখবে বাংলার জনগণ।’