প্রতিনিধি, গাজীপুর: গাজীপুরে পোশাক কারখানায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করেছে তুসুকা গ্রুপ। গত শনিবার দিবাগত রাতে কোনাবাড়ী থানায় ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনকে অভিযুক্ত করে এ মামলা করা হয়। কারখানায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে তুসুকা গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু সাঈদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন। গতকাল রোববার দুপুরে কোনাবাড়ী থানার ওসি কেএম আশরাফ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ওসি আরও জানান, আগেও শ্রমিক বিক্ষোভ, কারখানায় অগ্নিসংযোগ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় কোনাবাড়ী থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় চার হাজারের বেশি শ্রমিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে কারখানা ভাঙচুরের ঘটনায় আরও নয়টি মামলা হয়েছে। গত শুক্র ও শনিবার আশুলিয়া মডেল থানায় এসব মামলা দায়ের করে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা দুই হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে গত রোববার (৫ নভেম্বর) পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই তিন মামলায় অজ্ঞাতনামা দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়।
ঢাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শাহিদুল ইসলাম মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘দায়ের করা মামলার একটিতে ১৬ জন এজাহার নামীয় আসামি রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা পোশাকশ্রমিক বেশে দুষ্কৃতকারী।’
জানা যায়, আন্দোলনের সময় অনেক কারখানায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ না করলেও কাজ না করে বসে থেকেছেন। আবার কোনো কোনো কারখানায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ভাঙচুর করেছেন। এ অবস্থায় গত শনিবার ১৩০টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
আশুলিয়া এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলোÑএআর জিনস, শারমিন গ্রুপের শারমিন ফ্যাশনস-১ ও শারমিন ফ্যাশনস-২, জিমেক্স ক্লোথিং, সাউদার্ন ক্লথিং, এন আর ক্রিয়েশনস, ডেকো ডিজাইন, ডেকো ওয়াসিং, হা-মীম গ্রুপের দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেড, অ্যাপারেলস গ্যালারি, রিফাত গার্মেন্টস এবং এক্সপ্রেস ওয়াশিং অ্যান্ড ডায়িংসহ ১৪টি পোশাক কারখানা।
শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় বন্ধ ঘোষণা করা বেশ কিছু কারখানা আজ রোববার খুলে দেয়া হয়। এসব কারখানার শ্রমিকরা আবার কাজে ফিরেছেন। এ ছাড়া আরও ৬০টির মতো কারখানা বন্ধ ছিল।’
গত ২৩ অক্টোবর থেকে গাজীপুরে শ্রমিকরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে মজুরি বোর্ড ন্যূনতম ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন ঘোষণা করে। ঘোষিত ওই বেতন প্রত্যাখ্যান করে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকরা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিক্ষোভ ও আন্দোলন করে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২৩টি কারখানায় ভাঙচুরের অভিযোগে ২২টি মামলা হয়েছে।