ইন্টারনেটের সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে গতি বৃদ্ধিতে ব্যবস্থা নিন

আধুনিক যুগে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের যেসব উদ্ভাবন মানবসভ্যতাকে সমৃদ্ধ করেছে, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেগুলোর প্রথম দিকে থাকবে। এগুলো বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তির কর্মকাণ্ডকে এক সুতোর বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। আর মোবাইল ফোন পুরো বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনেছে।

ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আমরা কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনে বিশ্বের তাবত খবর মুহূর্তের মধ্যেই পেয়ে যাই। কম্পিউটার, ল্যাপটপ তো হাতের মুঠোয় বহন করা সম্ভব নয়। তাই এ ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের বিকল্প নেই। কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অফিসের কর্মচারীদের মধ্যে যোগাযোগ রাখতে পারে। ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যম, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যাংকিং, পরিষেবার টিকিট বুকিং সর্বত্রই ইন্টারনেটের দাপট। পড়ালেখা, বিনোদন, গবেষণার ক্ষেত্রেও ইন্টারনেটের উপযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিভিন্ন দেশ ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে উদ্যোগ নিচ্ছে। আর মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে আমরা একেবারে পেছনের দিকে। ‘মোবাইল ইন্টারনেট: গতি বাড়লেও উগান্ডার চেয়ে ৪১ ধাপ পেছনে বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে গতকালের শেয়ার বিজে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেটের গতি কেমন, তা তুলে ধরে প্রতি মাসে স্পিডটেস্ট গেøাবাল ইনডেক্স নামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওকলা। প্রতিষ্ঠানটির অক্টোবরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল ইন্টারনেটে বিশ্বের ১৪২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১১তম। মোবাইল ইন্টারনেটের ডাউনলোড স্পিড ২০ দশমিক ৬৬ এমবিপিএস। আর আপলোড স্পিড ১০ দশমিক শূন্য ৬ এমবিপিএস।

২০২২ সালের নভেম্বরে মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে ওকলার র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১৯তম। অর্থাৎ এক বছরে র‌্যাংকিংয়ে আট ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।

ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক নিয়ে কিছু কাজ করলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি আরও বাড়িয়ে র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের সংগঠন আইএসপিএবি।

ইন্টারনেট বা আন্তর্জালে যুক্ত থাকা মানে বিশ্বের সব কম্পিউটার সার্ভারের সঙ্গে ব্যবহারকারীকে যুক্ত রাখা। এটি নিছক যোগাযোগের মাধ্যম নয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান অতি দুর্বল। ইন্টারনেটের এমন গতি দিয়ে আমরা কীভাবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব? সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ ঘোষণা করেছে, অন্যদিকে স্মার্ট হওয়ার অন্যতম প্রধান উপাদান উপকরণ ইন্টারনেটের গতিতে আমরা অনুন্নত দেশের সমপর্যায়ের; ক্ষেত্রবিশেষে তার চেয়ে কম। দেশে ফোরজি সেবা চালু থাকলেও ইন্টারনেটে পিছিয়ে থাকা দুঃখজনক।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারে সর্বোচ্চ ও সর্বনি¤œ দাম নির্ধারণের পাশাপাশি এর গতি বৃদ্ধিতেও মনোযোগ বাড়াতে হবে। প্রতি বছরই  টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘চলতি বছরই দেশব্যাপী উচ্চগতির ইন্টারনেট পাওয়া যাবে। ফাইভজি যুগে প্রবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ।’ কিন্তু ব্যবহারকারী এবং বৈশ্বিক র‌্যাংকিং নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে অন্য কথা। দেশে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা গেলেই আমরা চতুর্থ বিপ্লব ও স্মার্ট বাংলাদেশ হওয়ার দিকে এগিয়ে যাবে। তাই এ-সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে হবে এবং অপটিক্যাল ফাইবার ব্রডব্যান্ড সংযোগ সর্বত্র পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০