দাবি মানতে সরকারকে এক মাস সময় দিল সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্রমিক হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণ, আহতের চিকিৎসা, শ্রমিকদের মুক্তি, কারখানা শিল্পে ঘোষিত মজুরি প্রত্যাহার করে ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করাসহ বিভিন্ন দাবি মেনে নিতে সরকারকে এক মাসের সময় দিয়েছে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ (এসএসপি)।

দাবি মেনে না নিলে এক মাস পর ধর্মঘটসহ কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন এসএসপির প্রধান সমন্বয়ক প্রকৌশলী ফয়েজ হোসেন।

গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসএসপি আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি নিয়ে কথা বলার কারণে অনেক জাতীয় নেতাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। আজকের এই সমাবেশ থেকেও শ্রমিক দলের সহসভাপতি মেহেদি হাসান, শ্রমিক ফেডারেশনের কর্মী সিরাজুল ইসলামসহ অন্তত ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

শ্রমিক সমাবেশ কেন্দ্র করে সকাল থেকেই জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশ সদস্যরা প্রেস ক্লাবে প্রবেশ ফটকের সামনে অবস্থান নেন।

শ্রমিক সমাবেশে এসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা তাদের মজুরি বৃদ্ধির ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে নির্যাতিত হয়েছেন, আহত ও নিহত হয়েছেন। যখনই শ্রমিকেরা তাদের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করেন, তখনই তাদের আন্দোলনকে রাজনৈতিক আন্দোলন বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়। তিনি বলেন, শ্রমিকদের মজুরি যা বাড়ে, তার চেয়ে বেশি বাড়ে জিনিসপত্র, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ। এর বিরুদ্ধে যখন আন্দোলনে নামেন তখন বলা হয়, শ্রমিকেরা কারখানায় আগুন দিয়েছেন। কোনো শ্রমিক তার উপার্জনস্থল কারখানায় আগুন দেন না।

শ্রমিক সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ২৮ অক্টোবর সমাবেশে এক পুলিশ সদস্য মারা গেছেন। এর আগে আন্দোলন করতে গিয়ে চার শ্রমিক মারা গেলেন। ওই চারজনের কথা কেউ বলেন না। সরকার শুধু লাগাতারভাবে ওই একটি ঘটনা বলে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ক্ষমতা টিকিয়ে সবই সরকার করেছে। শ্রমিকদের পেটে যে ভাত যাচ্ছে না, তাদের পেটে যে আগুন জ্বলছে, এর কোনো ব্যবস্থা তারা করে না।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, পোশাকশ্রমিকেরা পাঁচ বছরে একবার মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করেন। তখন এজেন্টদের দিয়ে কারখানা ভেঙে শ্রমিকদের ওপর দায় চাপানো হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সমাবেশে বক্তব্য দেন গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক। তিনি বলেন, শ্রমিকেরা মজুরি বাড়াতে আন্দোলন করছেন। তাদের ধরে নিয়ে গাড়ি পোড়ানোর মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আজীবন বিএনপি করা শাহজাহান ওমরকে ব্ল্যাকমেল করে নৌকায় উঠিয়েছেন। এভাবে ব্ল্যাকমেল করে মানুষকে নৌকায় উঠিয়ে নৌকা গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারবেন না।’

শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০