বাজার মূলধন কমেছে ১২ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলমান রাজনৈতিক সংকটে পুঁজিবাজারেও দেখা যায় মন্দা প্রবণতা। পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত ছিল গত সপ্তাহজুড়েও। ফলে সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের গতি। এতে গত এক সপ্তাহে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে প্রায় প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। আর চার সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার ওপরে কমেছে।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার তার থেকে বেশি। সপ্তাহজুড়ে বাজারটিতে ৬৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯২টির। এছাড়া ২২২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

দাম অপরিবর্তি থাকা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।

দাম কমার তালিকা বড় হওয়ায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৭১ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা, যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল সাত লাখ ৭২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬৭৫ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের তিন সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ১২ হাজার ৩৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ চার সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন ১২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা কমেছে।

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ২৩ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক কমে ১৪ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ। অর্থাৎ তিন সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪৮ পয়েন্ট কমে গেছে।

প্রধান মূল্যসূচক কমলেও বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি বেড়েছে এক দশমিক ৬১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১২ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫৮ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৮ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ।

আর ইসলামি শরিয়াহর ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক গত সপ্তাহে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৬ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৩ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৪ শতাংশ।

প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৮১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪০০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বা ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।

আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৯০৭ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় দুই হাজার দুই কোটি ১০ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৯৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বা ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। ৬৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইয়াকিন পলিমার।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑফু-ওয়াং ফুড, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, প্যাসিফিক ডেনিমস, ফু-ওয়াং সিরামিক, এমারেল্ড অয়েল, জেমিনি সি ফুড এবং বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০