স্বতন্ত্র প্রার্থীকে চাপ দিলে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হবে: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বতন্ত্র প্রার্থীকে চাপ দিয়ে নির্বাচন থেকে সরাতে গেলে তাতে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সোমবার রাতে ১৪ দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতির বৈঠক প্রসঙ্গে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বতন্ত্র তো স্বতন্ত্রের জায়গায় আছেন। আমি যদি এখন কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীকে চাপ দিয়ে সরে দাঁড়াতে বলি, তাহলে কি সেটা নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হবে না?’

১৪ দলীয় জোটের বেশি আসন চাওয়া কতটা যৌক্তিকÑএমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অযৌক্তিক বলে কিছু নেই। তারা দাবি করতেই পারে। তারা জোট করে, তারা দল করে, দলের কাছে তো তাদের মর্যাদার একটা ব্যাপার আছে। তারা বিভিন্ন দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা চাইতে পারে। কিন্তু এখানে অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে হবে। একজনকে আমরা দিলাম, কিন্তু সে নট এ ইলেক্টেবল, সেই অবস্থায় একটা সমস্যা হয়ে যাবে। সেখানে অন্য কেউ বেরিয়ে আসতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘একদলকে ৪০টার দিয়ে দেয়া যায়, দিলে কী হবে? আমরা খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কথা বলেছি। একটা বিষয়ে লক্ষণীয়, রাজনৈতিক আলোচনাটা বেশি হয়েছে।’

কাদের বলেন, ‘বৈঠকে রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে। প্রত্যেকে প্রত্যেকের ডিউজ, কী করণীয় এ নিয়ে আলোচনা করেছেন।’

আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমু ভাই (আমি হোসেন আমু) আছেন, তিনি বিষয়টি সমন্বয় করছেন।’

বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৪ দলের সভাপতির কথা তারা শুনতে আগ্রহী ছিলেন। জাতীয়, আন্তর্জাতিক ও ভূ-রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে তাদের জানারও আগ্রহ ছিল। জোটের চেয়ারম্যান আমাদের প্রধানমন্ত্রী কী ভাবছেন? বাংলাদেশকে নিয়ে বাইরের শক্তিরও খেলা আছে। নিশ্চয়ই এখানে প্রত্যেকেরই একটা স্বার্থ রয়েছে। বাংলাদেশকে ঘিরে ভারত মহাসাগর, বঙ্গপোসাগরের তীরবর্তী দেশগুলোর এখানে এদের মধ্যেই একটা কোঅরডিনেশন আছে। এ বিষয়গুলো তারা সময়ে সময়ে আলাপ-আলোচনা করে ব্যালেন্স একটা নীতি গ্রহণ করার বিষয়ে তারা ঐকমত্য পোষণ করেন। নেত্রী এখানে বাংলাদেশকে নিয়ে বাইরের স্বার্থের যে খেলা বহুদিন আগে থেকে আছে, এদেশে ’৭৫ ঘটে গেছে, ৩ নভেম্বর ঘটেছে। বারবার তো হামলা আসে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের মূল কথা হচ্ছে, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। সে ব্যাপারে আমরা সবাই একমত।’

কয়েক জায়গায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছেÑএ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এটা কি নতুন কোনো দৃষ্টান্ত? এটা তো প্রায় নির্বাচনেই হয়। তাতে কী ক্ষতি হবে? প্রার্থিতা যদি যৌক্তিকভাবে নির্বাচন কমিশন বাতিল করে, তাহলে আমরা কোনো অজুহাতে আপত্তি করতে যাব না। শূন্য এবার কোথাও থাকবে না।’

নির্বাচনে দলের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে সফট স্টাইল, ফ্রি স্টাইলের বিষয় নয়। এটা আমাদের ইলেকশন স্ট্র্যাটেজি। আমাদের চেয়ারম্যান ওপেনলি বলে দিয়েছেন। জোটের চেয়ারম্যান, আমাদের সভাপতি একাধিকবার বলে দিয়েছেন।’

জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের কথা হচ্ছে। আলোচনা চলছে। কথাবার্তা বলেই তো সমাধান করতে হবে।’
বৈঠকে ১৪ দল নেতারা সন্তুষ্ট কি না, জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘১৪ দলের নেতারা সন্তুষ্ট কি না, এ তথ্য নেয়ার দায়িত্ব সাংবাদিকদের। আমাদের মধ্যে ঐক্যের কোনো ঘাটতি নেই। উই আর হ্যাপি।’

নির্বাচন একতরফা হচ্ছেÑএমন অভিযোগ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘একতরফা নির্বাচন যারা বলে, তারা একতরফা বাধা দিচ্ছে। এটা একতরফা নির্বাচন নয়। যারা একতরফা বাধা দিচ্ছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।’

দলীয় প্রার্থী ও দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়া প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন, একে অন্যকে বাধা দেয়ার ঘটনাও আছেÑএ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পার্টির লোক হোক, যে-ই হোক, কেউ বাধা দিতে পারবে না।’

এসময় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, সংস্কৃতি-বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০