মোবাইল গ্রাহকের অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তিতে গুরুত্ব দিন

 

চার মোবাইল ফোন অপারেটরের সেবা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) এক বছরে সাড়ে ১৫ হাজার অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে সেবার মান এবং ইন্টারনেটের গতি নিয়ে গ্রাহকদের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে। বিটিআরসির তথ্য, জমা পড়া অভিযোগের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১১ হাজার ৮০৯টি, এখনও নিষ্পত্তি করা হয়নি তিন হাজার ৫২৬টি অভিযোগ। অর্থাৎ বিটিআরসিতে জমা পড়া অভিযোগের প্রায় ৩০ শতাংশ অভিযোগ এখনও নিষ্পত্তি করা হয়নি।

দেশে পরিচালিত মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর বিরুদ্ধে ডেটা স্পিড, কলড্রপ, ডেটা ভলিউম ইস্যু, সিম বার, রিচার্জিং, এমএনপি, প্যাকেজ মাইগ্রেশনসহ নানা ধরনের সেবায় অভিযোগ বাড়ছে গ্রাহকদের। এ অভিযোগের কোনোটি গুরুত্বহীন নয়। কম্পিউটারের আদি যুগে (১৯৫০-১৯৭০) খুব কম শক্তির একটি কম্পিউটার রাখতেই বিশাল আকৃতির গুদদোমের প্রয়োজন হতো। আজ সেখানে মানুষের হাতের মুঠোয় ঘুরে বেড়াচ্ছে এর চেয়ে কয়েক লাখ গুণ শক্তিশালী কম্পিউটার। কম্পিউটারের আকার আকৃতি দিন দিন ছোট হচ্ছে আর শক্তি ও কর্মক্ষমতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে মূলত ডিজিটাল ইলেকট্রনিকসের ক্রমাগত বিবর্তনের ফলে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, উন্নত দেশের চ্যালেঞ্জ, পেপারলেস অফিস ব্যবস্থাপনা, ফ্রিল্যান্সিং, স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্পÑ যা-ই বলি না কেন কম্পিটারের বিকল্প নেই। মোবাইল ফোন কম্পিউটারেরই ক্ষুদ্র সংস্করণ। এ অবস্থায় মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের

সেবাদানে দায়িত্বশীল না হয় কিংবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা সে ক্ষেত্রে দ্রুত অভিযোগের নিষ্পত্তি না করে; তাহলে আমার পিছিয়ে থাকব প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে।
দেশে উন্নত প্রযুক্তির ফোরজি সেবা চালু হলেও মানসম্মত সেবা পাওয়া যাচ্ছে না, বরং নেটওয়ার্ক অসক্ষমতা, ডেটা স্পিড ও কল ড্রপ বাড়ছে। পাশাপাশি মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর নানামুখী অফারে গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত হচ্ছেন, প্রতারণার শিকার হলেও সমাধান মেলে না। প্রতিদিন অসংখ্য গ্রাহক অপারেটরগুলোর বিভিন্ন অফার ও সার্ভিসে ভোগান্তি প্রতারণার শিকার হলেও বিটিআরসি বা ভোক্তা অধিকারে খুব কমসংখ্যক গ্রাহক তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে অভিযোগ করে থাকেন। কেননা বিপুলসংখ্যক গ্রাহক এখনও জানেই না ভোগান্তি বা প্রতারণার শিকার হলে কোথায় কীভাবে অভিযোগ করতে হয়। আবার অনেক গ্রাহক কাজের ব্যস্ততার কারণে উপায় জেনেও অভিযোগ করতে চান না। গ্রাহক ভোগান্তি কমাতে অবশ্যই বিটিআরসিকে শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে। অভিযোগ রয়েছে, বিটিআরসির ওয়েবসাইটে গ্রাহক অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেয় না। অথচ নিয়ম অনুযায়ী গ্রাহকদের যেকোনো অভিযোগ সর্বোচ্চ সাত দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করার কথা। এমনি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্স বাতিলের বিধানও আছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এখন পর্যন্ত কোনো অপারেটরকে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে দেখিনি। বিটিআরসির শর্টকোড ১০০-তে ফোন করলেও বেশিরভাগ সময় কেউ ফোন ধরেন না। নিজেদের জায়গায় আকাশচুম্বী দৃষ্টিনন্দন ভবন হলেও, তাতে গ্রাহকদের অভিযোগ জমা নেয়ার মতো সেবাকেন্দ্র নেই। অন্তত নির্দিষ্ট সময় অন্তর গণশুনানি আয়োজন করা হলেও, ব্যবহারকারীরা সরাসরি অভিযোগও পরামর্শ দিতে পারতেন। এ সেবা সময়োপযোগী করতে বাস্তবানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০