নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে মাঠে নামবে বিজিবি। এরপর সেনাবাহিনী নামবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি আরও শান্ত ও সুন্দর হবে বলে মনে করেন মন্ত্রী।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।
সারাদেশে নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা হচ্ছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সবসময় মনিটর করছে। যাকে মনে করছে বদলাতে হবে, আমাদের কাছে লিস্ট পাঠাচ্ছে, তাৎক্ষণিকভাবে তাকে পাল্টে দেয়া হচ্ছে। এটা নির্বাচন কমিশন সবসময় করে, সেই অনুযায়ী করে দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এলে একটা উত্তেজনা ও আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যার যার প্রার্থীকে জয়ী করতেই হবে, এরকম একটা ভাব চলে আসে প্রার্থী ও সমর্থকদের। সেই সময় বাগবিতণ্ডা ও একটা কিছু হয়। এখন পর্যন্ত সবকিছু নজরদারিতে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। ভবিষ্যতে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব। দু-একটি ঘটনা যে ঘটে গেছে, জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
তিনি বলেন, ‘আগামী ২৯ ডিসেম্বর মাঠে বিজিবি চলে আসবে, বিজিবির পর আবার সেনাবাহিনীও চলে আসবে। কাজেই যেসব বিষয়ে আপনারা আশঙ্কা করছেন, কিংবা যা দেখছেন, সেই পরিস্থিতি আরও শান্ত হয়ে যাবে, আরও সুন্দর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে তাদের প্রার্থীরা বেশি আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন কি না, এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন এলে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নেতাকর্মীরা তাদের প্রার্থীকে পাস করানোর জন্য হয়তো অনেক কিছু করেন। প্রার্থীরা নিজেরাও হয়তো জানেন না, এমন ঘটনাও ঘটে। বিশেষ করে নতুন যারা আসছেন, তাদের মধ্যে আচরণবিধি ভাঙার হার অনেক বেশি।’
এবার মাঠে সেনাবাহিনী ১৩ দিন থাকছে। এটার কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি নাÑজানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, এটার কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। যে ধরনের সহিংসতা একটি দল করছে নির্বাচন বানচাল করার জন্য, তারা নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেÑএদেশের মানুষ সেগুলো বিশ্বাস করে না। আমাদের নির্বাচন কমিশনার তারপরও নির্বাচন আরও নিরাপদ করার জন্য এ ব্যবস্থাটা নিয়েছেন।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছেÑএ বিষয় জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এমন কোনো তথ্য আমার জানা নেই। পুলিশ পাঠিয়ে থাকতে পারে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ ধরনের কিছু আসেনি।’
ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা সব সময় একটা অ্যাসেসমেন্ট করা হয়ে থাকে। অনেক সময় একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে পুলিশের যেতে সময় লাগে, সেসব জায়গায় হতে পারে, সেটা আমার জানা নেই। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র আছে কি না, নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন সেটা জানতে চায়। সেই তালিকা নিয়ে তারা সবসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়ে থাকে।’
পরে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অবহিত হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকা চাচ্ছে। পুলিশ এটা চূড়ান্ত করলেই পাঠিয়ে দেয়া হবে। ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ বা কেন্দ্র আছে কি না, সেটি তারা জানতে চেয়েছেন। পুলিশ আজকের মধ্যেই করে ফেললে সেটি সন্ধ্যার মধ্যে পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে।’
ভোট বর্জনসহ বিএনপির বিভিন্ন ঘোষণা কি আপনারা বিবেচনায় নিচ্ছেন নাÑএ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো বলছি জনগণ এগুলো বিশ্বাস করে না। জনগণ এগুলো মানছেও না।’