সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: চলমান ডলার সংকটে কমেছে দেশে আমদানি ও রপ্তানি। এতে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর দিয়ে গত এক বছরের ব্যবধানে জাহাজ আসা কমেছে ২৫৬টি এবং কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমেছে প্রায় ৯২ হাজার টিইউএস। আর ডলার সংকট না কাটলে এলসি খোলার হার আরও কমার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এতে চলতি বছরের জাহাজ হ্যান্ডলিং ও কনটেইনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতি, বাণিজ্যিক পণ্য সবই আনা হয় কনটেইনারে। আবার সমুদ্রপথে রপ্তানি পণ্যের প্রায় পুরোটাই কনটেইনারে পাঠানো হয়। দেশের মোট কনটেইনারের ৯৮ শতাংশ পরিবহন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। বিদায়ী ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কনটেইনার (প্রতিটি ২০ ফুট লম্বা) পরিবহন হয়েছে ৩০ লাখ ৫০ হাজার; যা ২০২২ সালে পরিবহন হয়েছিল ৩১ লাখ ৩২ হাজার। অর্থাৎ সংখ্যার হিসাবে কমেছে ৯১ হাজার ৭১১টি কনটেইনার। এসব কনটেইনার বন্দরের মূল জেটি, ঢাকার কমলাপুর কনটেইনার ডিপো ও কেরানীগঞ্জের পানগাঁও নৌ-টার্মিনালে কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা যোগ করে এই হিসাব দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ তালিকায় আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী ও খালি কনটেইনার হিসাব করা হয়েছে। অপরদিকে দেশের আমদানি ও রপ্তানির পুরো পণ্য আসে জাহাজে করে। গত ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের চার হাজার ১০৩টি জাহাজ হ্যান্ডলিং করে; যা গত ২০২২ সালে মোট জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছিল চার হাজার ৩৬১টি। অর্থাৎ ২৫৬টি জাহাজ কম হ্যান্ডলিং হয়েছে। ফলে এই বন্দরের কনটেইনার ও জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের সংখ্যার হিসাব দিয়ে দেশের অর্থনীতির গতিপ্রকৃতির ধারণা পাওয়া যায়।
চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা বলেন, ডলার ও বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে সমুদ্রপথের বাণিজ্য কমেছে। তাতে জাহাজ হ্যান্ডলিং ও কনটেইনারজাত পণ্য পরিবহন কমেছে। আবার অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণে পণ্য আমদানিও কিছুটা কমেছে। তবে পণ্য পরিবহন কমলেও বন্দরের সক্ষমতা ও সেবার মান বেড়েছে। দ্রুত সময়ে পণ্য ডেলিভারি হচ্ছে।
ভোগ্যপণ্যের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী নেতা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন শেয়ার বিজকে বলেন, ২০২২ সালের শেষদিকে মূলত ডলার সংকটে এলসি খোলার হার কমতে থাকে। ফলে ২০২৩ সালে ডলার সংকটে পণ্য আমদানি কমতে থাকে। এসবের প্রভাবে বিদায়ী বছরেও চট্টগ্রাম বন্দরের ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা স্বাভাবিক। আর ডলার প্রাপ্ততা স্বাভাবিক না হলে ২০২৪ সালেও আমদানি কমবে। এসব বিবেচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকে পলিসি নিতে হবে।