নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে গঠন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কবে নাগাদ মন্ত্রিসভা গঠন হতে পারে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমার মনে হয় আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে মন্ত্রিসভা গঠন হয়ে যাবে।’
নতুন সরকারের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের শপথ কবে হতে পারে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি আমি বলতে পারব না।’
বিরোধী দলে কারা আসছে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী যদি দেখা যায়, তাহলে তো লাঙল মার্কা হবে। বাকি স্বতন্ত্ররা থাকবেন। তাছাড়া পরিস্থিতি বোঝা যাবে সামনের রাজনীতি কোন দিকে যায়।’
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কি বিরোধী দল হিসেবে থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে বিষয়ে এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত শপথ না হচ্ছে।’
নির্বাচন পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আমার এলাকার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। আমার এলাকায় বলতে পারব স্বতঃস্ফূর্ত ভোট হয়েছে। সকাল থেকে কীভাবে মানুষ ভোট দেয়ার জন্য উৎসুক ছিল এবং খুবই সুষ্ঠুভাবে, বলা যেতে পারে একটা-দুইটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদে খুবই সুষ্ঠুভাবে ভোটাভুটি হয়েছে। খুবই সুশৃঙ্খলভাবে, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।’
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন প্রচণ্ড চাপের মধ্যে ছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যু ছিল। তার আগে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ছিল। বৃহৎ একটি দল বিএনপি-জামায়াত জোট সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে। কিছুদিন আগেও ট্রেনে আগুন দিয়ে চারজনকে হত্যা করেছে এ বিষয়গুলো খুব খারাপভাবে নিয়েছেন ভোটাররা। দেশব্যাপী এই যে ৪০ শতাংশ ভোট হয়েছে, এটা কিন্তু বড় একটা জিনিস।’
তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচন কমিশন খুবই প্রোফেশনাল ওয়েতে পরিচালনা করেছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই, মাঠ পর্যায়ে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে খুবই সুষ্ঠুভাবে, খুব কড়াকড়িভাবে তারা নির্বাচন পরিচালনা করেছেন।’
আগামীতে সরকারের জন্য কী কী চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রণালয়ের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হলো গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরবচ্ছিন্ন রাখা। সব প্রবলেমকে মাথায় রেখে এটাকে (বিদ্যুৎ ও জ্বালানি) নিরবচ্ছিন্ন রাখা। গ্রাহক পর্যায়ে একটি সহনীয় পর্যায়ে রাখা জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ, এটা হলো আগামী দিনের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। আমি মনে করি আমাদের মন্ত্রণালয় এটার জন্য প্রস্তুত আছে।’
তিনি বলেন, ‘সামনে একটা বড় বিষয় হলো আমাদের দেশের ইকোনমির ধারাবাহিকতা রাখা, মূল্যস্থিতিকে নিচের দিকে নেয়া। এ বিষয়গুলো বড় একটা চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ বিশ্বে আবার কি চেঞ্জ আসে, বিশেষ করে জ্বালানি ক্ষেত্রে বা রাজনৈতিক পরিস্থিতির ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে আমাদের আগামীর প্লান করা উচিত।’
ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক কি নাÑএর উত্তরে তিনি বলেন, ‘৪০ শতাংশ ভোট খুবই সন্তোষজনক। এটা ব্যাপক ভোট এই পরিস্থিতিতে। অনেক দেশে তো ৭ শতাংশ ভোট পড়ে না। আমার এলাকায় ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে।’
বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি খাতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। এখনকার যে ধারাবাহিকতা সেটা রাখা এবং বিদ্যুৎ-জ্বালানিকে একটা সহনীয় পর্যায়ে রাখা।’
আইএমএফের চাপে নতুন সরকার কি আবার দাম বাড়াবেÑএই প্রশ্নের উত্তরে নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি দাম বাড়ানো বা কমানো বিষয় না, আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেভাবে বিদ্যুৎ জ্বালানির দাম হয়, আমরা সে মেথডে আস্তে আস্তে এগোচ্ছি। একটা পর্যায়ে আমাদের যেতে হতো, সুতরাং সে পর্যায়ে আমরা যাচ্ছি।’