নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর নতুন যে মন্ত্রিসভা ঘোষিত হয়েছে, তাতে ১৫ পূর্ণমন্ত্রী, ১৩ প্রতিমন্ত্রী ও দুই উপমন্ত্রী বাদ পড়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের তৃতীয় দিনের মাথায় গতকাল বুধবার রাতে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
তিনি জানান, এবার পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের জন্য ২৫ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ১১ জনকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে বলা হয়েছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় তিন উপমন্ত্রী থাকলেও এবার কাউকে উপমন্ত্রী রাখা হয়নি। আজ নতুন এই মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা শপথ নেবেন।
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পরও প্রধানমন্ত্রীর পর ২৫ পূর্ণমন্ত্রীর শপথ হয়। তাদের মধ্যে দুজন ছিলেন টেকনোক্র্যাট কোটায়। এবারের জাতীয় নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করেন তারা। ফলে বুধবার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন যে ২৩ জন, তাদের মধ্যে কেবল ৯ জন নতুন সরকারে থাকছেন।
ভোটের আগে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করা ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবার ডাক পাননি।
বাদ পড়া প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে তিনজন এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন পেয়েও পরাজিত হয়েছেন তিনজন। এই ছয়জনের কেউ নেই নতুন মন্ত্রিসভায়।
বাদ পড়ার তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রীর পাশাপাশি বাদ পড়েছেন প্রতিমন্ত্রীও। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়েও একই ঘটনা ঘটেছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রীর পাশাপাশি বাদ পড়েছেন উপমন্ত্রীও।
বাদ পড়া মন্ত্রীদের সবাই গত ৭ জানুয়ারির ভোটে জিতে সংসদ সদস্য হয়েছেন।
যেসব পূর্ণমন্ত্রী বাদ পড়েছেন: মন্ত্রিসভার নতুন তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, গত পাঁচ বছর দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার নতুন মন্ত্রিসভায় থাকছেন না।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় বীর বাহাদুর উশৈ সিং, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদকেও নতুন মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী যারা বাদ পড়েছেন: শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসাও থাকছেন না নতুন সরকারে।
ভোটের আগে টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করা পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলমও ডাক পাননি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এবার জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। ফলে তাদের বাদ পড়ার বিষয়টি অনেকটা অনুমেয় ছিল।
মনোনয়ন পেয়েও ভোটে হেরে যাওয়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও ডাক পাননি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমও ডাক পাননি এবার।