অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ফ্রান্স থেকে এয়ারবাস কিনবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফর করেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সে সময় দেশটি থেকে বাংলাদেশের এয়ারবাস কেনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামীতে দেশটি থেকে এয়ারবাস কেনা হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ফ্রান্স ও জার্মানির রাষ্ট্রদূত। দুই রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ফ্রান্স থেকে এয়ারবাস কেনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এয়ারবাস কেনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে (ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে)। এটি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সফরেও আলোচনা হয়েছে। আমাদের ইকোনমি যখন পারমিট করবে তখন আমরা পারব।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরে বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। তবে বাংলাদেশ এখনও চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছায়নি এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, স্যাটেলাইট-২ আমাদের একটা অগ্রাধিকার। বিশেষ করে, আবহাওয়া বার্তা পাঠানোর জন্য, নিরাপত্তা ইস্যুতে গুরত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে সেপ্টেম্বরে এমওইউ হয়েছে। এর মধ্যে আমাদের নির্বাচন ছিল, দ্রুত কাজটি করা হবে।

জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্স ও জার্মানি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। স্বাধীনতার পরপরই যে গুটিকয়েক দেশ আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল, দেশ দুটি তাদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার হচ্ছে জার্মানি। ফ্রান্সও আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ওপরের দিকে রয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও জার্মান চ্যান্সেলরের যে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন, সেগুলো দুই রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।

মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ থেকে অনেক যুদ্ধশিশুকে দত্তক নিয়েছিল জার্মানি ও ফ্রান্স। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের যুদ্ধশিশুদের নিয়েছিল জার্মানি ও ফ্রান্স। পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতার কারণে ওই শিশুদের জš§ হয়েছিল। এজন্য তাদের যুদ্ধশিশু বলা হয়। বিশেষ করে জার্মানি ব্যাপক হারে নিয়েছিল। তাছাড়া ওই সময় শিশুগুলো অনাথ হয়ে গিয়েছিল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক মুক্তিযোদ্ধাও পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলেন। তাদেরও চিকিৎসা দিয়েছিল দেশ দুটি। আমি এজন্য জার্মানি ও ফ্রান্সকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি।

এদিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ স্থাপনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে আগ্রহী ফ্রান্স। এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সহযোগিতা দিতে চায় ফ্রান্স।

রাষ্ট্রদূত বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। আমাদের উভয়পক্ষের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে পর্যালোচনা করেছি। দুই দেশের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে সংস্কৃতি বিনিময়, সামরিক খাত, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

মাসদুপুই বলেন, এয়ারবাস ক্রয় ও সামরিক খাতে সহযোগিতা বাড়ানো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে সহযোগিতা দিতেও প্রস্তুত ফ্রান্স। বিশেষ করে তরুণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা কাজ করতে আগ্রহী।

প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফর করেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তার সফরে বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ এখনও চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছায়নি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০