নিজস্ব প্রতিবেদক:গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনের সকালে বিশ্বের ১১০ শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে ঢাকার স্থান প্রথম। এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে ঢাকার স্কোর ছিল ৩০৫। এ স্কোরকে দুর্যোগপূর্ণ বলে ধরা হয়। গত বৃহস্পতিবারও ঢাকার বায়ু ছিল দুর্যোগপূর্ণ, স্কোর ছিল ৪১১।
গতকাল বিশ্বে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এ শহরের স্কোর ২৭৭। বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে।
আইকিউএয়ারের দেয়া তালিকায় বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই (পিএম ২.৫) দূষণের প্রধান উৎস। ঢাকার বাতাসে যতটা এই বস্তুকণা আছে, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে ৪৯ গুণের বেশি। বাতাসের এ অবস্থা থাকায় সবার জন্য পরামর্শÑ‘আজ বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।’
বায়ুমান পর্যবেক্ষণের কাজ করে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, গত মঙ্গলবার রাতেও ঢাকার বায়ু দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় পৌঁছেছিল। কয়েক দিন ধরেই বায়ুর এ অবস্থা। এখন এ অবস্থা সম্পর্কে মানুষকে জানানো এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা নেয়াই প্রধান কাজ।
বায়ুদূষণ বেশি হলে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন সংবেদনশীল গোষ্ঠীর ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অন্তঃসত্ত্বা ও জটিল রোগে ভোগা ব্যক্তিরা। তাদের বিষয়ে বিশেষ যত্নবান হওয়া দরকার বলে পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বা ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়। ঢাকায় গত জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দিন দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের মধ্যে কাটিয়েছে নগরবাসী। জানুয়ারির মোট ৯ দিন রাজধানীর বাতাসের মান দুর্যোগপূর্ণ ছিল, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।