ব্রিটেনের কারখানাগুলোয় কমেছে ক্রয়াদেশ

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক : ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া বা ব্রেক্সিট ঘিরে দেশটিতে চলমান অনিশ্চয়তা এবং আমদানি খরচ বৃদ্ধি ব্যবসায়িক আস্থায় প্রভাব ফেলছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এপ্রিলের পর ব্রিটেনের কারখানাগুলোয় ক্রয়াদেশ সর্বনি¤েœ চলে এসেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

কনফেডারেরশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রি (সিবিআই) উৎপাদনকারীদের মধ্যে জরিপ করে মাসিক প্রতিবেদনে বলেছে, কারখানাগুলোতে নতুন ক্রয়াদেশ আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে অনেক কম ছিল।

এছাড়া গত তিন মাসে ব্রিটেনে উৎপাদনেও শ্লথগতি ছিল। আর এতে ভ‚মিকা ছিল খাদ্য ও পানীয় খাতের। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় মূলত এসব প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কমিয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্রেক্সিট ঘিরে চলমান অনিশ্চিত পরিস্থিতির কারণে দেশটির ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে ঋণমান নির্ধারণকারী সংস্থা মুডি’স। সংস্থাটি আশঙ্কা করছে, সরকারি অর্থায়নের ক্ষেত্রে বেশ দুর্বল অবস্থায় চলে যাবে ব্রিটেন। এছাড়া ব্রেক্সিট দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও হ্রাস করবে। আর এসব কারণেই দেশটির ঋণমান ‘ডাবল এ ওয়ান’ থেকে ‘ডাবল এ টু’তে নামিয়ে এনেছে সংস্থাটি।

ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় দেশটির ছোট কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়ে রিজার্ভ বাড়ানোর দিকে ঝুঁকছে। এটিকে ব্রিটেনের বাণিজ্য অঙ্গনে টালমাটাল অবস্থার ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

লয়েডস ব্যাংকিং গ্রæপের প্রকাশিত ছয় মাসের ব্যবসায়িক পরিস্থিতি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এক মিলিয়ন পাউন্ড স্ট্যার্লিং বা এক দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলারের কম আয়ের কোম্পানিগুলো গড়ে ব্রিটেনে ২১ হাজার ৬৯০ পাউন্ড বা ২৬ হাজার ৫২০ ডলার বিনিয়োগ করবে বলে প্রত্যাশা করছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ৭৪ শতাংশ কম।

২০১৫ সাল থেকে ব্রিটেনের ছোট ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ পরিকল্পনা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্যাংকটি। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত ছোট কোম্পানিগুলোর প্রত্যাশিত বিনিয়োগে এটিই হবে সবচেয়ে বড় পতন।

ব্রিটেনের সবচেয়ে বড় ঋণদাতা ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জো হ্যারিস বলেন, স্থিতিস্থাপকতা আনতে বিনিয়োগ কমিয়ে আনা বাণিজ্য অঙ্গনের জন্য শঙ্কার কারণ।

বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, নগদ অর্থ মজুদ অর্থনৈতিক শ্লথগতির সময় কোম্পানিগুলোকে সাহায্য করবে। তবে ব্যাংকাররা বলছেন, খরচ কমিয়ে দেওয়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সমৃদ্ধির জন্য হুমকিস্বরূপ।

অন্য আরেকটি ব্যাংকের বাণিজ্যিক ঋণ শাখার প্রধান জানান, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে কোম্পানিগুলো যে হারে নগদ অর্থ মজুদ করেছিল, ঠিক ওই হারেই বর্তমানে ব্রিটেনের ছোট কোম্পানিগুলোকে অর্থ মজুদ করে বিনিয়োগ কমাতে দেখা যাচ্ছে।

গত বছরের জুনে ব্রেক্সিট গণভোটের পর অন্যান্য মূদ্রার বিপরীতে পাউন্ড স্টালিংয়ের দরে প্রায় ১৬ শতাংশ পতন ঘটে। এ দরপতনে বিভিন্ন খাতে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

সম্প্রতি ৪৫৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কনফেডারেশন অব ব্রিটিশ ইন্ডাট্রির (সিবিআই) জরিপ চালিয়ে দরপতনের প্রভাব বের করার চেষ্টা করেছে। তাতে দেখা গেছে, রপ্তানি খাতে ব্যপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। তবে উৎপাদনকারীরা দক্ষ কর্মশক্তির সম্ভাব্য ঘাটতি নিয়ে শঙ্কিত।

এদিকে পাউন্ডের দরপতনে দেশটির রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়লেও আমদানির চিত্র ভিন্ন। গত তিন বছরের মধ্যে সম্প্রতি আমদানি পণ্যের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। ফলে রপ্তানি চাহিদা বাড়লেও বেশিরভাগ কোম্পানি মনে করছে পাউন্ডের দরপতন তাদের জন্য ইতিবাচক নয়।

 

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০