উৎপাদন বাড়াতে কৃষিতে ড্রোন ব্যবহার  

শেয়ার বিজ ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকায় ড্রোন ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ড্রোনের মাধ্যমে পুরো খামারের ওপরে নজরদারি করা হয়। এসব ড্রোনের তোলা ছবি দেখে সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। এতে কৃষি খাতে উৎপাদন বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। খবর বিবিসি।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়েস্টার্ন কেপ অঞ্চলে ফার্স্ট ফ্রুট গ্রæপের একটি লেবুর বাগানে ব্যবহার করা হচ্ছে এমন ড্রোন। বাগানটির বেশিরভাগ লেবুই রফতানি হয় মধ্যপ্রাচ্যে। বাকিটা চলে যায় স্থানীয় সুপার মার্কেটে। বাগানটির প্রধান নির্বাহী হাইন গার্বার জানিয়েছেন, ড্রোন ব্যবহার করে বেশ উপকৃত হচ্ছে তার খামার।

তিনি বলেন, সাধারণত বাগানের সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা কঠিন হয়। এছাড়া সময়েরও একটা ব্যাপার আছে। ধরুন বাগানের অন্য কোনো অংশে আপনার যাওয়া হলো না, আর সেখানে কোনো সমস্যা হয়ে গেল, এসব সমস্যারই সমাধান করছে ড্রোন। আপনি নিজে উপস্থিত না হতে পারলেও পুরো বাগানের ওপর নজর রাখছে দূর থেকে পরিচালিত ছোট এ উড়ন্ত যন্ত্রটি।

দক্ষিণ আফ্রিকায় এ প্রযুক্তির উদ্যোক্তারা বলছেন, খামারের বেড়া কোথায় ভেঙে গেছে, কোথায় পানি কমে গিয়ে ফসল শুষ্ক হয়ে গেছে, খামারের কোনো অংশে ফসল কম হয়েছে, অথবা কোথায় মাটির চেহারা দেখতে কেমনÑসবই উঠে আসবে ড্রোনের তোলা ছবি থেকে। এসব ডেটা কম্পিউটারে নিয়ে নিয়মিত বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।

জাতিসংঘের মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যা দাঁড়াবে দশ বিলিয়নে। এত বিপুল মানুষের খাদ্যের জোগান দিতে এ সময়ের মধ্যে বিশ্বের কৃষি উৎপাদন অন্তত ৭০ শতাংশ বাড়াতে হবে। বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ অব্যবহƒত চাষযোগ্য জমি রয়েছে আফ্রিকাতে। তাই উৎপাদন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করতে হবে এ অঞ্চলের দেশগুলোকেই।

ওয়েস্টার্ন কেপ অঞ্চলের কৃষি খামারগুলোকে ড্রোন সেবা দিয়ে থাকে অ্যারোবটিকস নামের একটি কোম্পানি। ড্রোন থেকে তোলা ছবি তারা বিশ্লেষণ করেন। কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী জেমস প্যাটারসন বলেন,  বর্তমানে মাটির আর্দ্রতা রক্ষা করা এ অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ওয়েস্টার্ন কেপ অঞ্চলে এ মুহূর্তে খরা বিরাজ করছে। তাই বাগানগুলোতে সঠিকভাবে সেচ ব্যবস্থাপনা বজায় রাখতে চেষ্টা করা হচ্ছে। ড্রোন ব্যবহারে কোন অংশে কম সেচ দেওয়া হয়েছে, সেই বিষয়ের ওপর নজর রাখা যায়। এছাড়া ফসলের উৎপাদন কোথায় কতটা হলো তা বোঝা যায়। কোনো কিছু সমস্যা হয়ে ওঠার আগেই ধরতে পারছি আমরা।” তিনি জানান, খামারিরা মোবাইল ফোনের অ্যাপ দিয়ে নিজেরাও যাতে এসব ড্রোন পরিচালনা করতে পারেন, সে ব্যবস্থাও চালু করার চেষ্টা চলছে।