সংবাদপত্র শিল্পের জন্য শুল্ক ও কর ছাড় চায় নোয়াব

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংবাদপত্র শিল্প বাঁচাতে আগামী বাজেটে নিউজপ্রিন্টে আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। একই সঙ্গে এ খাতকে সেবামূলক শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে করপোরেট কর সর্বনিম্নে নির্ধারণ অথবা অবলোপন করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে গতকাল রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও নোয়াবের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট বৈঠকে এ প্রস্তাব দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এটি ছিল আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের জন্য অংশীজনদের সঙ্গে প্রথম বৈঠক।

বৈঠকে নোয়াবের পক্ষে প্রস্তাব তুলে ধরেন এর সভাপতি এ. কে. আজাদ। তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্র শিল্প সাম্প্রতিককালে একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। একদিকে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল মাধ্যমের বহিঃপ্রকাশ, টেলিভিশনের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি যেমনভাবে সংবাদপত্র শিল্পকে বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি করেছে, অন্যদিকে বিভিন্ন শুল্ক, ভ্যাট, করপোরেট ট্যাক্স এই শিল্পের বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

এ. কে. আজাদ বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান অবস্থায়, বিশেষত ডলারের ক্রমবর্ধমান বিনিময় হার এই শিল্পকে নতজানু করে ফেলেছে। অল্প কিছুদিন আগেও এক টন নিউজপ্রিন্টের মূল্য ছিল ৬০০ ডলারের নিচে, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০০ ডলারের ওপর। এর অন্যতম প্রধান কারণ টাকা ডলারের বিরূপ বিনিময় হার।’

কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘নিউজপ্রিন্টে আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ হলেও তার সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট, অগ্রিম আয়কর, পরিবহন বিমা ইত্যাদিসহ ল্যান্ডের ব্যয় প্রায় ৩০ শতাংশে দাঁড়ায়।’

এ. কে. আজাদ আরও বলেন, ‘সংবাদপত্র সেবা শিল্প হিসেবে সরকার কর্তৃক ঘোষিত। সাংবাদিক বাদেও মুদ্রণ, বিপণন, বিতরণ ও বিজ্ঞাপন ইত্যাদিসহ অগণিত মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে নির্ভরশীল। এর অব্যাহত অগ্রগতি ও পরিচালনার জন্য শুল্ক ও কর নীতি প্রয়োগের বিপুল সংস্কার তথ্য সহায়ক ভূমিকা প্রয়োজন। এ পরিপ্রেক্ষিতে নোয়াব নিম্নবর্ণিত প্রস্তাব পেশ করছেÑনিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক ২ শতাংশ করা হোক। ভ্যাট ১৫ শতাংশের স্থলে পাঁচ শতাংশ করা হোক। সংবাদপত্র শিল্পকে সেবামূলক শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে করপোরেট ট্যাক্স সর্বনিম্নে নির্ধারণ করা অথবা অবলোপন করা হোক।’

নোয়াবের লিখিত প্রস্তাবনায় বলা হয়, ‘বেশ কয়েক বছর সরকার সংবাদপত্র শিল্প বিকাশে তাদের কোনো প্রস্তাব বা প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনায় নেয়া হয়নি। তবে আগামী বাজেটে প্রস্তাবিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয়ার অনুরোধ করা হয়।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক ও নোয়াবের নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহফুজ আনাম বলেন, ‘প্রতিবছর বাজেটের আগে এ শিল্পের জন্য যৌক্তিক কিছু প্রস্তাব দেয়া হলেও, তা আমলে নেয়া হয় না।’ আলাদা কোনো বৈঠকে হলেও কোনো সমস্যার কারণে এটি আমলে নেয়া হয় না তা জানানোর অনুরোধ জানান। সার্বিকভাবে নোয়াবের প্রস্তাবগুলো কার্যকরের আহ্বানও জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ‘কোনো খাতকে বিশেষ সুবিধা দেয়া হলে এর অপব্যবহারের জন্য অনেকে বসে থাকে। নিউজপ্রিন্টে আমদানি শুল্ক কমানো হলে তখন সব কাগজই দেশে আসবে নিউজপ্রিন্ট হয়ে।’ তবে এবার নোয়াবের দেয়া হাতেগোনা তিনটি প্রস্তাব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবে এনবিআর বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০