নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেডের। সম্প্রতি অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কোম্পানিটি এমন তথ্য জানায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানিটির গত ৩১ জানুয়ারি থেকে ধারাবাহিকভাবে শেয়ারদর বাড়ছে। ওই দিন তাদের শেয়ারদর ছিল ১৯৬ টাকা ৮০ পয়সা, যা গতকাল ৭ ফেব্রুয়ারি লেনদেন হয় ২৭৬ টাকা ৬০ পয়সায়। এ হিসেবে মাত্র ৫ কার্যদিবসের ব্যবধানে দর বেড়েছে ৭৯ টাকা ৮০ পয়সা। আর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসই। কোম্পানিটির অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ডিএসই নোটিশ পাঠায়। জবাবে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারদর বাড়ছে বলে জানায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ বা ২২ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ২৭৬ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৫১ শেয়ার ৫৮০ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর চার কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনিম্ন ২৪৬ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৭৬ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ৬২ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ২৭৬ টাকা ৬০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
কোম্পানিটি ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। তাদের ৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন পাঁচ কোটি টাকা। কোম্পানির মোট ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে সরকারি ৫১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭ দশমিক ০৫ এবং বাকি ৪১ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।
চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২৩) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে শ্যামপুর সুগার। আর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২৩) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১০ টাকা ৩৯ পয়সা (লোকসান), যা আগের বছর একই সময় ছিল ৭ টাকা ৩৯ পয়সা (লোকসান)। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি লোকসান ৩ টাকা বেড়েছে। অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৩) ইপিএস হয়েছে ২১ টাকা ৭ পয়সা (লোকসান), আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২৬ টাকা ৬৯ পয়সা। অর্থাৎ প্রথমার্ধের হিসাবে শেয়ারপ্রতি লোকসান কমেছে ৫ টাকা ৬২ পয়সা। এছাড়া ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৩২ টাকা ২৮ পয়সা (লোকসান)। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে ২১ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ১ পয়সা (লোকসান) ছিল।
এদিকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোন লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা করেছে। আলোচিত এ হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৩ টাকা ৬২ পয়সা (লোকসান)। ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২১১ টাকা ২১ পয়সা (লোকসান)। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থ প্রবাহ হয়েছে ৩১ টাকা ৯৪ পয়সা (লোকসান)। এর আগে ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। আলোচিত এ হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৩ টাকা ৩ পয়সা (লোকসান)। ৩০ জুন ২০২২ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৬৭ টাকা ৫৭ পয়সা (লোকসান)। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থ প্রবাহ হয়েছে ৪৯ টাকা ৯১ পয়সা (ঘাটতি)।