নিজস্ব প্রতিবেদক: নগদ সহায়তা প্রত্যাহারের পূর্ব ঘোষিত সার্কুলারে সংশোধনী এনে কিছু পরিবর্তন করেছে সরকার। এতে অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতকে আবারো নতুন বাজার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে এসব বাজারে রপ্তানিতে ৩ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। আজ সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) নতুন এক সার্কুলারে এই সংশোধনীর কথা জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যেখানে আলোচিত এই তিনটি রপ্তানি গন্তব্যকে প্রচলিত বাজারের আওতাভুক্ত করা হয়েছিল, যেখানে রপ্তানিতে দেওয়া হয় মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ সহায়তা। এর দুই সপ্তাহ পার না হতেই আজকে নতুন প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে। আগের প্রজ্ঞাপনটি চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছিল। সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে সেটি পেছানো হয়েছে। এতে জানানো হয়, এটি ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর করা হবে।
এছাড়া, ৩০ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপনে যেসব পোশাক পণ্যকে নগদ সহায়তা থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল, নতুন সার্কুলারে আবারো তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
৫ এইচএস কোডের পোশাক রপ্তানিতে আর নগদ সহায়তা দেওয়া হবে না বলে আগে জানানো হয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে আছে, পুরুষ ও বাচ্চা ছেলেদের জন্য নিট বা ক্রশেট শার্ট, টি শার্ট, ভেস্ট, জার্সি, পুলওভার, কার্ডিগান, জ্যাকেট, ব্লেজার, ট্রাউজার, স্যুট ও সমজাতীয় পণ্য। পণ্যগুলোর এইচএস কোডগুলো হলো– ৬১০৫, ৬১০৭, ৬১০৯, ৬১১০ এবং ৬২০৩।
বিজিএমইএ’র তথ্যমতে, এই পাঁচটি হারমোনাইজড সিস্টেম (এইচএস) কোডভুক্ত আইটেম ২৫.৯৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় অর্জনে ভূমিকা রেখেছে, যা গত অর্থবছরে হওয়া মোট রপ্তানির ৪৬.৭১ শতাংশ। মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির মধ্যে যা ছিল ৫৫.২২ শতাংশ।
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উত্তরণ হওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এই লক্ষ্যে, পর্যায়ক্রমে সব ধরনের রপ্তানি পণ্যে প্রণোদনা হ্রাস করার একটি কৌশলগত পরিকল্পনা ৩০ জানুয়ারিতে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়। তবে এই উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন রপ্তানিকারকরা।
এত দিন বাংলাদেশ মোট ৪৩ খাতে নগদ সহায়তা দিয়ে আসছিল। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, নগদ প্রণোদনার ৬৫ শতাংশ বা প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার মূল সুবিধাভোগী হলো তৈরি পোশাক ও বস্ত্র শিল্প। এই বাস্তবতায়, নগদ সহায়তা প্রত্যাহার নিয়ে ব্যবসায়ী মহল তাঁদের উদ্বেগ তুলে ধরে। যদিও ওই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলেন, করদাতাদের টাকায় রপ্তানিতে দেওয়ার প্রণোদনার দিনশেষে সুফল পায় পশ্চিমা ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও তাঁদের ভোক্তারা। পশ্চিমা ব্র্যান্ড ও বায়াররা প্রণোদনার হিসাব করেই দাম ঠিক করে।