ছয় মাসে আজিজ পাইপসের শেয়ারদর বেড়ে দ্বিগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে চলছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ‘জেড’ ক্যাটাগরির ‘আজিজ পাইপস’। দীর্ঘদিন ধরে লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তবুও বাড়ছে কোম্পানিটির শেয়ারদর। গত ছয় মাসে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তবে কী কারণে দর বাড়ছে কোম্পানির কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। ফলে আজিজ পাইপসের শেয়ারদর নিয়ে বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

তথ্যমতে, গত ১ জুন আজিজ পাইপসের শেয়ারদর ছিল ৬৬ টাকা ১০ পয়সা। গতকাল বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার সর্বোচ্চ ১৩২ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারদর ছয় মাসের ব্যবধানে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৫১ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ১৩৯ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, কোম্পানিটি দীর্ঘ এক যুগ ধরে শেয়ারহোল্ডাদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। কোম্পানিটির পুঞ্জীভ‚ত লোকসানের পরিমাণ ৪১ কোটি ৮৪ লাখ।

কোম্পানির সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ছয় পয়সা, আগের বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল তিন পয়সা।

এদিকে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ার কারণ জানতে একাধিকবার স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের জবাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দর বাড়ার কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য কোম্পানির কাছে নেই। এর পরপরই কোম্পানির দর বাড়ার বিষয়টি তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তদন্ত কমিটি গঠন করার পর দু-একদিন কোম্পানির শেয়ারদর কিছুটা কমলেও পরবর্তী সময়ে আবার ধারাবাহিকভাবে দর বাড়তে দেখা গেছে। তবে তদন্ত প্রতিবেদন এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানি সচিব এএইচএম জাকারিয়া শেয়ার বিজকে বলেন, ‘দর বাড়ার বিষয়ে বিএসইসি থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল। আমরা তার জবাব দিয়ে দিয়েছি। আমরা জানিয়েছি, দর বাড়ার কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আমাদের নিকট নেই।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লোকসানি আজিজ পাইপস দীর্ঘদিন ধরেই লোকসানে রয়েছে। কোম্পানিটি স্বল্প মূলধনি এবং শেয়ারসংখ্যা কম হওয়ার কারণে কোনো চক্র তা নিয়ে সহজে নাড়াচাড়া করতে পারে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারী এ শেয়ারে বিনিয়োগ করে। সুযোগ বুঝে সুবিধাভোগী চক্রটি সরে পড়ে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এর পেছনে যারাই জড়িত থাকুক তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে বারবার সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো না বলে মনে করছেন তারা।

কোম্পানির লভ্যাংশের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল। ওই বছর প্রিমিয়ামসহ রাইট ইস্যুও করেছিল কোম্পানিটি।

উল্লেখ্য, আজিজ পাইপস ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা ৪৮ লাখ ৫০ হাজার। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে পাঁচ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৭ দশমিক ৭২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

 

 

 

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০