শেরপুরে ধানের চারা গাছে পচন

প্রতিনিধি, রফিক মজিদ (শেরপুর ): শেরপুরে পাচটি গ্রামের প্রায় ২ শত একর জমির চলতি বোরো ধানের চারা গাছে অজ্ঞাত কারণে পচন ধরেছে। ফলে এসব জমি থেকে কোন ফসল না পাওয়ার আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে ওইসব এলাকার শতাধিক চাষী। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দাবি করছে চারা গাছ পঁচে যাওয়ার বিষয়ে স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের অবহেলা, সময়মত পরামর্শ না দেওয়া এবং নিম্নমানের ধানের বীজ রোপনের কারনেই পঁচে যাওয়ার মুল কারণ। তবে কৃষি বিভাগ বলছে কৃষকদের ভুল ও ধানের বীজের কারণে এ অবস্থা হতে পারে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ইউনিয়নের খামারপাড়া, বাদাপাড়া, বাটিয়াপাড়া, পৃর্বপাড়া, ফকিরপাড়া সহ পাঁচটি গ্রামের কৃষক সৌকত আলীর আড়াই একর, সোহাগ মিয়ার দুই একর, আজহার আলীর দুই একর, ইব্রাহীমের এক একর, আতর আলীর দেড় একর, মহেজ আলীর দুই একর, কাজলের পাচ কাঠা, মুরাদের দশ কাঠা, চুন্নুর দশ কাঠা, সোহেলের এক একর, লান্ডুর দেড় একর, মুসলিমের দেড় একর, আনসার আলীর এক একরসহ শতাধিক কৃষকের প্রায় দুইশত একর বোরো ধানের চারা গাছে অজানা রোগে পচন ধরেছে।

গত দেড় মাস আগে স্থানীয় কৃষকরা তাদের জমিতে ব্রি ধান-২৯ সহ অন্যান্য জাতের বোরো ধানের চারা রোপন করেন। কিন্তু অজ্ঞাত রোগের কারণে শুধু মাত্র ব্রি ধান-২৯ জাতের ধানের চালাগুলো বর্ধনশীল হয়নি। সেই সাথে পাতাগুলো হলুদ রঙের বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে এবং চারার গোড়ায় পচন ধরেছে। ফলে ওই ইউনিয়নের পাচটি গ্রামের প্রায় শতাধিক কৃষক হতাশ হয়ে পড়েছে। কৃষকরা হা-হুতাশ করছেন তার জমিতে রোপিত বোরো ধানের চারাগুলো পচন ধরার কারণে। অথচ এ সময়ে চারা গুলো থেকে ধানের ফলন বা গোছা বের হওয়ার কথা।

পাকুরিয়া ইউনিয়নের কৃষকরা জানায়, এসব কৃষকের মধ্যে অনেকে রযেছেন যারা ঋণ-ধার করে আবাদ শুরু করেছে। ধানের ফলন পেয়ে তারা তাদের সে ঋণ পরিশোধ করবে। কেউবা আবার এ ফলনের উপরই নির্ভর করে বছর জুড়ে তাদের খোরাকি। কিন্তু ফলন ভালো হবে তো দূরের কথা গাছের চারাই পচে যাচ্ছে। তাই তারা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ বা সহায়তা দাবি করছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।

বাংলাদেশ কৃষক সমিতি শেরপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক সোলাইমান আহাম্মেদ বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ হলে তারা বলেন নিন্মমানের বীজের কারনে এমন হয়েছে। তাহলে আমাদের কথা হচ্ছে এই নিম্নমানের বীজ বাজারে কেন বিক্রির অনুমতি দিল সরকার। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি ধানের চারা মরে যাওয়ার মূল কারণ উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে ভিন্ন কথা। পাকুরিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বরত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন মোল্লা জানায়, চারা রোপনে কৌশলগত ভুল এবং যখন চারাগুলো রোপন করা হয়েছিল তখন প্রচন্ড শীত ছিল। এছাড়া ব্রি ধান-২৯ বীজের বিষয়েও তারা সন্দেহ করছেন। তাই এমনটা হয়েছে। তবে তিনি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের যে পরামর্শ দিয়েছেন তা কৃষকরা মেনে ব্যবস্থা নিলে পচনরোধ সম্ভব বলে তিনি জানায়।

জেলায় এবার প্রায় ৯২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৯৫ ভাগ আবাদ শেষ হয়েছে বলে জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। এ আবাদ আগামী এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে উঠে যাবে বলে কৃষি বিভাগ জানায়।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০