কনটেইনার ধারণক্ষমতার ৫২ শতাংশই অব্যবহৃত

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম : দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রধান গেটওয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে কনটেইনার ধারণ সক্ষমতা ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস। এর বিপরীতে বর্তমানে বন্দর ইয়ার্ডে কনটেইনার আছে ২৫ হাজার ৪৪ টিইইউএস। অর্থাৎ সক্ষমতার মাত্র ৪৭ দশমিক ৮০ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে। অথচ বছরখানেক আগেও কনটেইনার জট নিয়ে সবার মাথাব্যথা ছিল।

চবক সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ কার্যক্রম সম্পাদিত হয়। সমুদ্রবন্দর দিয়ে শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতি, বাণিজ্যিক পণ্য সবই আনা হয় কনটেইনারে। আবার সমুদ্রপথে রপ্তানি পণ্যের প্রায় পুরোটাই কনটেইনারে পাঠানো হয়। দেশের মোট কনটেইনারের ৯৮ শতাংশ পরিবহন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। ফলে এই বন্দরের কনটেইনারের সংখ্যার হিসাব দিয়ে দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র পাওয়া যায়। শনিবার পর্যন্ত বন্দরের মূল জেটি, ঢাকার কমলাপুর কনটেইনার ডিপো ও কেরানীগঞ্জের পানগাঁও নৌ টার্মিনালে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী ও খালি কনটেইনার ছিল মাত্র ২৫ হাজার ৪৪ টি কনটেইনার (প্রতিটি ২০ ফুট লম্বা)। যদিও বর্তমানে কনটেইনার রাখার ধারণসক্ষমতা আছে ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস। অর্থাৎ সক্ষমতার মাত্র ৪৭ দশমিক ৮০ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া গত ২০২৩ সালে বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহন হয়েছে ৩০ লাখ ৫০ হাজার। ২০২২ সালে পরিবহন হয় ৩১ লাখ ৩২ হাজার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কমেছে প্রায় ৯১ হাজার কনটেইনার।

চবকে কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চট্টগ্রাম বন্দরে অপারেশনাল ও কনটেইনার পরিবহন সক্ষমতা বাড়ানো হয়। এর মধ্যে যন্ত্রপাতি, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল, বন্দরের জলসীমা, জাহাজের ড্রাফটের পরিমাণসহ বহুমাত্রিক নতুন নতুন সুবিধা যুক্ত হয়েছে।

কাট্টলী টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেয়ার বিজকে বলেন, ইউরোপে এখনও মন্দা চলছে। তাদের পোশাকের চাহিদা কম। উল্টো দিকে দেশে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ায় পোশাক খাতে খরচ বেড়েছে। এমনিতে আমাদের আমদানি ও রপ্তানি কমেছে। যার ফলে বন্দরের কনটেইনার পরিবহন কমেছে। এ পরিস্থিতিতে গ্যাস-বিদ্যুৎ খরচসহ কিছু খরচ কমিয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার চেষ্টা করতে হবে। ফলে অর্থনীতিতে সুখবর আসবে না। ফলে বন্দরেও কনটেইনার পরিবহন বাড়বে না।

এ বিষয়ে জানার জন্য চবক সচিব ও মুখপাত্র ওমর ফারুকের ব্যবহƒত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংযোগটি রিসিভ করেনি।

তবে পরিবহন শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কনটেইনার রাখার সক্ষমতা ৫৩ হাজারেরও বেশি। আর বর্তমানে ২৫ হাজার কনটেইনার আছে। এর মধ্যে আট হাজার ৮০০ মতো নিলামযোগ্য কনটেইনার পড়েছে। ফলে আসলে নিয়মিত কনটেইনার ১৭ হাজারের মতো। এছাড়া দ্রুত সময়ে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল চালু হবে। এ টার্মিনালে প্রায় চার লাখ কনটেইনার রাখা যাবে। সুতরাং কনটেইনার রাখার আরও সক্ষমতা তৈরি হবে।

এ বিষয়ে বেসরকারি আইসিডি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) সচিব রুহুল আমিন সিকদার শেয়ার বিজকে বলেন, বর্তমানে আমাদের ডিপোগুলোর সক্ষমতা ৯০ হাজার। এর মধ্যে আছে ৫৫ হাজার  কনটেইনার। এর মধ্যে ৪৫ হাজার কনটেইনারই খালি। ফলে ডিপোগুলোর আয় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমেছে। আগে আমাদের মাসে ৭০ হাজার কনটেইনার রপ্তানি কনটেইনার হ্যান্ডলিং হতো, তা এখন হচ্ছে ৫৫ হাজারের মতো। আর আমদানি কনটেইনার হ্যান্ডেলিং হতো ২৫ হাজার।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০