নিজস্ব প্রতিবেদক: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডলার ও অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় ১৯ জন ব্যাংকার ও দু’জন মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের মালিককে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীরা প্রতিদিন শতকোটি টাকার বেশি মূল্যের ডলার ও বৈদেশিক মুদ্রা আনেন। এসব ডলার জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করছে চক্রটি।
জাল ভাউচারে যাত্রীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে পরে তা খোলা বাজারে ছাড়া হচ্ছে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংক ও নিবন্ধিত মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হয়েও তারা বেআইনিভাবে বিদেশি মুদ্রা কিনে ব্যক্তিগত লাভের জন্য খোলাবাজারে বিক্রি করছেন।
মামলার আসামিরা হলেনÑরাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও বুথ ইনচার্জ আনোয়ার পারভেজ, প্রিন্সিপাল অফিসার শামীম আহমেদ, আশিকুজ্জামান, সিনিয়র অফিসার সুরুজ জামাল, অমিত চন্দ্র দে, মানিক মিয়া, সাদিক ইকবাল, সুজন আলী ও হুমায়ুন কবির।
অন্যদিকে সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া (ক্যাশ), কামরুল ইসলাম (ক্যাশ), একই ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার সোহরাব উদ্দিন খান, খান আশিকুর রহমান, এবিএম সাজ্জাদ হায়দার (ক্যাশ), সামিউল ইসলাম খান, অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আব্দুর রাজ্জাককে আসামি করা হয়।
এ ছাড়া বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের অফিসার আবু তারেক প্রধান, ব্যাংকটির সাপোর্টিং স্টাফ মোশাররফ হোসেন, এভিয়া মানি এক্সচেঞ্জারের কাস্টমাস সার্ভিস ম্যানেজার আসাদুল হোসেন ও ইম্পিরিয়াল মানি এক্সচেঞ্জের পরিচালক কেএম কবির আহমেদকে আসামি করা হয়।
দুদক সচিব এ বিষয়ে বলেন, বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় আসামিদের বিরুদ্ধে বিদেশি মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় ও মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা অবৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচারকারী দুর্নীতিবাজদের অবৈধভাবে মুদ্রা সরবরাহ করছেন।
দেশে চলমান ডলার সংকটের পেছনে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অবৈধভাবে কেনাবেচাকে দায়ী করে তিনি বলেন, অবৈধভাবে ডলার কেনাবেচার কারণে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। অবৈধ এসব অর্থ দেশের বাইরে পাচারও হতে পারে। দুদক এখন থেকে এসব বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করবে।
