শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ আর্থিক জালিয়াতির কারণে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ এফটিএক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্যাম ব্যাংকম্যান-ফ্রিডের ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। খবর: বিবিসি ও রয়টার্স।
নিউইয়র্কের ম্যানহ্যাটনের এক আদালতে শুনানির পর ব্যাংকম্যান-ফ্রিডকে (৩২) এ দণ্ড দেন জেলা জজ লুইস কাপলান। নিজের প্রতিষ্ঠা করা এফটিএক্সের গ্রাহকদের কাছ থেকে ৮০০ কোটি ডলার চুরির দায়ে ব্যাংকম্যান-ফ্রিড এ দণ্ড পান। এর মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত তরুণ বয়সে দুর্দান্ত সাফল্য পাওয়া আলোচিত এ উদ্যোক্তার নাটকীয় পতনের শেষ ধাপ সম্পন্ন হলো।
২০২২ সালে তার প্রতিষ্ঠানের হঠাৎ পতনের আগ পর্যন্ত ব্যাংকম্যান-ফ্রিড ক্রিপ্টোকারেন্সির হাই প্রোফাইল চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিবেচিত ছিলেন।
শুনানিতে ফ্রিড দাবি করেছিলেন, এফটিএক্সের গ্রাহকরা আসলে অর্থ হারাননি। কিন্তু আদালত তার এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। বিচার চলাকালে দেয়া স্বীকারোক্তিতেও ফ্রিড মিথ্যা বলেছেন বলে আদালত প্রমাণ পান।
জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে গ্রাহকদের শত শত কোটি ডলার চুরির সাতটি অভিযোগে গত বছরের ২ নভেম্বর ফ্রিডকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন এক বিচারক। ফ্রিডের কর্মকাণ্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রতারণা বলে অভিহিত করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
বিচারক কাপলান জানিয়েছেন, নিজের কর্মকাণ্ডের জন্য ফ্রিডের মধ্যে কোনো অনুশোচনা দেখা যায়নি। তিনি জানতেন এটা ভুল, এটা অপরাধ। ধরা পড়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে খুব খারাপ বাজি ধরেছিলেন বলে তিনি অনুশোচনা করছেন।
এর আগে ফ্রিড আদালতে বলেছিলেন, তিনি জানেন অনেক মানুষ আশাহত হয়েছেন। রায়ের আগে শান্ত ও স্পষ্টভাবে তিনি বলেন, আমি এর জন্য দুঃখিত। প্রত্যেক পর্যায়ে যা হয়েছে তার জন্য আমি দুঃখিত।
ব্যাংকম্যান-ফ্রিডের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তারা। তার মা-বাবা বলেছেন, আমাদের মন ভেঙে গেছে। আমরা আমাদের ছেলের জন্য লড়াই অব্যাহত রাখব।
পতনের আগ পর্যন্ত এফটিএক্স বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জগুলোর একটি ছিল। নিজের এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকম্যান-ফ্রিড ব্যবসায়িক সেলিব্রেটিতে পরিণত হয়েছিলেন। ক্রিপ্টোকারন্সি কিনতে ও লেনদেন করতে লাখ লাখ মানুষ এফটিএক্সের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করার দিকে ঝুঁকেছিলেন।
২০২২ সালে আর্থিক সমস্যার গুজব ছড়ানো শুরু হলে গ্রাহকরা আমানত তুলে নেয়ার তোড়জোড় শুরু করলে প্রতিষ্ঠানটির পতন ত্বরান্বিত হয় আর ফ্রিডের অপরাধগুলো প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।