তাপমাত্রার পাশাপাশি বাড়ছে লোডশেডিং

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রীষ্মের শুরুতে রাজধানীতে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ভালো থাকলেও লোডশেডিং অনেকটাই বেড়েছে গ্রামাঞ্চলে। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ এই মৌসুমে সর্বোচ্চ এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিংয়ের ধারণা করছিল। তবে গতকাল দুপুরে লোডশেডিং এক হাজার ৭০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় লোডশেডিং আগামী কয়েকদিন তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে গতকালই প্রথম লোডশেডিং এক হাজার ১০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রীষ্মে খরতাপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে বিদ্যুতের চাহিদা। এ সময় সেচ, বৈদ্যুতিক পাখা ও শীতাতপ যন্ত্রের ব্যবহারে চাপ বাড়ে। তবে জ্বালানির অভাবে চাহিদামতো বিদ্যুৎ উৎপাদন না থাকায় লোডশেডিং করতে হয় সরবরাহকারী সংস্থাকে। গত বছর চাহিদার তুলনায় ২৫ শতাংশের বেশি লোডশেডিং করে পল্লী বিদ্যুৎ। এবার ১২ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য থাকলেও গ্রামে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়েছে। তাপমাত্রার বৃদ্ধির প্রভাবে এ
রকম থাকলে শিগগিরই লোডশেডিং দুই হাজার মেগাওয়াট ছাড়াবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গতকাল (২ এপ্রিল) রাত ১২টা লোডশেডিং হয় এক হাজার ৩১৪ মেগাওয়াট। ওই সময় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু উৎপাদন করা হয়েছে ১২ হাজার ৩৭৪ মেগাওয়াট। রাত ১টায় চাহিদা কিছুটা কমায় লোডশেডিং কমে দাঁড়ায় এক হাজার ১৭০ মেগাওয়াট ও ২টায় এক হাজার ৭২ মেগাওয়াট। তবে ৩টায় আবার লোডশেডিং বেড়ে হয় এক হাজার ১৯০ মেগাওয়াট। রাত ৪টায় তা কমে দাঁড়ায় এক হাজার ৪০ মেগাওয়াট ও ৫টায় এক হাজার ৭৩ মেগাওয়াট।
সেহরির পর ভোর ৬টায় লোডশেডিং হাজার মেগাওয়াটের নিচে নামে। ওই সময় লোডশেডিং হয় ৬৪৯ মেগাওয়াট। তবে এরপর কিছুটা করে বাড়তে থাকে লোডশেডিং। বেলা ১১টায় তা আবার হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায়। দুপুর ১২টায় তা হাজার মেগাওয়াটের ঘরেই ছিল। তবে দুপুর ১টায় এক লাফে লোডশেডিং বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট। ওই সময় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। তবে সরবরাহ করা হয় ১২ হাজার ১৪৭ মেগাওয়াট।
তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় এরপর বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন না বেড়ে উল্টো কমেছে। এর প্রভাবে লোডশেডিংও বাড়তে থাকে। দুপুর ২টায় লোডশেডিং বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৬৪৬ মেগাওয়াট ও ৩টায় এক হাজার ৭৬২ মেগাওয়াট। বেলা ৪টায় লোডশেডিং কিছুটা কমে দাঁড়ায় এক হাজার ৫৭৬ মেগাওয়াট। তবে বিকাল ৫টায় আবার বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ৬৮৭ মেগাওয়াট। যদিও সন্ধ্যা ৬টায় ইফতারের আগে লোডশেডিং অনেকটা কমে হাজার মেগাওয়াটে নেমে আসে।
কুড়িগ্রামের এক বাসিন্দা ফোনে জানান, ‘ঠিক ইফতারের আগে আগে কারেন্ট চলে যায়। কারেন্ট চলে গেলে বাতি পাওয়া যায় না, অন্ধকার থাকে। অথবা নামাজের সময় ফ্যান ঘোরে না।’ জামালপুরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘খুবই সমস্যা করছে কারেন্ট। সারাদিনে মনে হয় না তিন-চার ঘণ্টার বেশি কারেন্ট থাকে।’
প্রসঙ্গত, গত বছর রমজানে ১৫ এপ্রিল সর্বোচ্চ দুই হাজার ৫০৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছিল। তবে জুনে কয়লা সংকটে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে রেকর্ড তিন হাজার ৪১৯ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছিল।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০