নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্ড ইস্যু করার মাধ্যমে ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এসএস স্টিল লিমিটেড। গত শনিবার (৯ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে বন্ড ইস–্য করার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এসএস স্টিলের ইস্যুকৃত এ বন্ডটি হবে ৭ বছর মেয়াদি আন-সিকিউরড, কনভার্টিবল বা রিডিমেবল কুপন বিয়ারিং বন্ড। বন্ডটি প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যু করা হবে। উত্তোলিত এই অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং বিদ্যমান কারখানায় বিএমআরই প্রকল্পে (আধুনিকীকরণ, পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ) বিনিয়োগ করবে। বন্ডটি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন সাপেক্ষে ইস্যু করা হবে।
২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২ শতাংশ নগদ এবং সব শেয়ারহোল্ডারের জন্য ৮ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৮৭ পয়সা। আর ২০২২ সালের ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৫ পয়সা। এছাড়া আলোচিত সময়ে তাদের শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৪ টাকা ৪ পয়সা (ঘাটতি)। এর আগের দুই হিসাববছর অর্থাৎ ২০২১ ও ২০২০ সালেও কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের দুই শতাংশ নগদ ও ৮ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে দুই টাকা ৩১ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২১ শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৫৮ পয়সা।
উল্লেখ্য, প্রকৌশল খাতের কোম্পানিটি ২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। তাদের ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৩২৮ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এসএস স্টিলের রিজার্ভে আছে ৪০১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট ৩২ কোটি ৮৬ লাখ ৩৩ হাজার ২০০ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩০ দশমিক ৮৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং বাকি ৫৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা গেছে, চলতি হিসাববছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৩) শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ২ পয়সা। অর্থাৎ প্রথমার্ধের হিসাবে শেয়ারপ্রতি আয় এক পয়সা বেড়েছে। অন্যদিকে দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২৩) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১ পয়সা। অর্থাৎ শুধু দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা ৮৯ পয়সা, যা ২০২৩ সালের ৩০ জুনে ছিল ২৩ টাকা ৯৯ পয়সা। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ১১ টাকা ৭৬ পয়সা (ঘাটতি), আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮ টাকা ১৩ পয়সা (ঘাটতি)।
এদিকে গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ বা ৬০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ১৩ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। ওইদিন কোম্পানিটির ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দিনজুড়ে ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৭৮০টি শেয়ার মোট ৮৮৬ বার হাতবদল হয়। ওইদিন শেয়ারদর সর্বনিম্ন ১৩ টাকা ২০ পয়সা ও সর্বোচ্চ ১৩ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়। তবে গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারদর ১০ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১৬ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।