মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। পবিত্র রমজানের পুরো এক মাস রোজা এবং সংশ্লিষ্ট ইবাদত ও বিধিনিষেধ পালনের পর শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ঈদুল ফিতর পালিত হয়। আর পঞ্জিকায় ঈদুল আজহা জ্বিলহজের ১০ তারিখে পালিত হয়। দুটি দিনই নানা আনন্দ আর খুশির আমেজে উদ্যাপিত হয়ে থাকে। ফলে মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃপ্রেম আর একতার বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।
রমজানের ঈদ অর্থাৎ ঈদুল ফিতর বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হয়। পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে ভ্রমণ, চিরাচরিত মিষ্টি খাবার, সুগন্ধি ব্যবহার, নতুন জামাকাপড় পরা, উপহার দেয়া প্রভৃতি কাজের আয়োজনের মধ্য দিয়ে বেশ আনন্দের সঙ্গে দিনটি উদ্যাপন করে মুসলমান সম্প্রদায়। এছাড়া আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আর নানা পর্যটক স্পটে বেড়াতে গিয়ে এ দিনটির আনন্দ একে অপরের সঙ্গে ভাগাভাগি করে মুসলিম পরিবারের সদস্যরা।
পাশাপাশি আল্লাহর আদেশে নিজ পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি করার হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর ইচ্ছা ও ত্যাগের কথা স্মরণ করে পালিত হয় ঈদুল আজহা, যা মুসলমানদের দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব। এ দিনটিতে মুসলমানেরা ফজরের নামাজের পর ঈদগাহে গিয়ে দুই রাকাত ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করে এবং অব্যবহিত পরে নিজ নিজ আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, ছাগল ও উট আল্লাহর নামে কোরবানি করে। বেশ আনন্দ আর উৎফুল্লের সঙ্গে এই দিনটি পালন করে মুসলিম সম্প্রদায়।
দুঃখের বিষয়, তরুণ প্রজš§ এই দিনটিকে নানা বেহায়াপনা আর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পালন করছেন। অশ্লীল গানবাজনা আর নাচের তালে মগ্ন হয়ে তারা রাস্তায় রাস্তায় ডিজে গান আর সাউন্ড সিস্টেমের মধ্য দিয়ে এ দিনগুলোয় আনন্দের নামে বেহায়াপনা আর শব্দদূষণের মতো মারাত্মক অসুবিধার সৃষ্টি করছেন। ফলে সাধারণ পথচারী থেকে শুরু করে অসুস্থ রোগীদের ব্যাপকভাবে ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। সড়কে ট্রাকে করে তরুণেরা যে সাউন্ড বাজিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে এই দিনটিকে পালনের নামে যে আচরণ করছেন, তা সভ্য সমাজে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। বরং এটি আদর্শ আর নৈতিকতা বিসর্জিত কর্মকাণ্ডের সমতুল্য।
একটা সভ্য সমাজ কখনও এহেন কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে না। বরং নিন্দার সঙ্গে এটি ধিক্কার জানাতে সক্ষম হয়। এহেন কর্মকাণ্ড একদিকে যেমন নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণ অন্যদিকে বিকৃত মস্তিষ্কের পরিচায়ক। সুস্থ মস্তিষ্কে চিন্তা করলে আমরা কখনোই এসব অসভ্য, বর্বর আর নিন্দনীয় কাজকে সমর্থন করতে পারি না। তাই আমাদের উচিত এহেন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে লিপ্ত তরুণ সমাজকে এর কুফল আর ক্ষতির কারণ দর্শিয়ে সতর্ক করতে হবে। প্রশাসনের সহায়তায় এদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
তৌহিদ-উল বারী
মুক্ত লেখক