নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারের টানা দরপতন কিছুটা লাঘব হচ্ছে। একদিন বাদে আরও সূচকের উত্থান হয়েছে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস গতকাল মঙ্গলবার দেশের পুঁজিবাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুনর্নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করার সংবাদে গত রোববার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৯৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে সোমবার পুঁজিবাজারে আবার দরপতন হয়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমে সবকটি মূল্যসূচক। এ পরিস্থিতিতে গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুর দিকে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। এতে লেনদেনের ২২ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান সূচক ২৩ পয়েন্ট কমে যায়। তবে প্রথম আধা ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর দাম কমার তালিকা থেকে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বেরিয়ে আসে। এতে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়। লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
কিন্তু লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এসে আবার দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। এতে দিনের লেনদেন শেষে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকা বড় হয়। অবশ্য এর মধ্যেও ৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততোটাই বাড়ে। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হলেও সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৪টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৮৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২২৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৩৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৭২ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে সোনালী আঁশের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের ৫৫ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৪০ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑওরিয়ন ইনফিউশন, ওরিয়ন ফার্মা, আইটি কনসালট্যান্ট, লাভেলো আইসক্রিম, গোল্ডেন সন, কোহিনুর কেমিক্যালস এবং বেস্ট হোল্ডিং।
অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ২২৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৪টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৫৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।