নিজস্ব প্রতিবেদক: এ বছরও পাসের হার ও জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। চলতি বছর ৮৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ ছাত্রী মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে; যেখানে ছাত্রদের পাসের হার ৮১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা।
এবার পূর্ণাঙ্গ জিপিএ অর্থাৎ পাঁচ এ পাঁচ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। তাদের মধ্যে ৮৩ হাজার ৩৫৩ জন ছাত্র; আর ৯৮ হাজার ৭৭৬ জন ছাত্রী। সেই হিসাবে ১৫ হাজার ৪২৩ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে।
গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করে ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থী। জিপিএ ৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন।
গত সাত বছর ধরেই মাধ্যমিকে পাসের হারের দিক থেকে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। ২০২৩ সালে ৮১ দশমিক ৮৮ শতাংশ ছাত্রী মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করে; যেখানে ছাত্রদের পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
গতবার জিপিএ ৫ পাওয়া ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৪ হাজার ৯৬৪ জন ছাত্র; আর ৯৮ হাজার ৬১৪ জন ছাত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার সকালে গণভবনে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন। এ সময় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্র সংখ্যা কমে যাওয়ার এবং পাসের হারে নিয়মিতভাবে ছাত্রদের পিছিয়ে থাকার কারণ খুঁজতে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কারণটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, ছাত্র সংখ্যা কেন কম। কী কারণে ছাত্র কমে যাচ্ছে। পাসের হারের ক্ষেত্রেও অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে। সেটা খুব ভালো কথা। কিন্তু তারপরও আমি বলব, এ বিষয়টায় আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে। শিক্ষায় অংশ নেয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। মেয়েদের হার অনেক বেড়েছে। প্রাথমিকে একসময় ৫৪ শতাংশ ছাত্রী যেত, এখন ৯৮ শতাংশ মেয়ে স্কুলে যায়।’
‘আর এখানে (এসএসসির ফল) ফলাফল দেখে আমি হিসাব করছিলাম, প্রত্যেকটা বোর্ডে আমাদের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত। মাত্র তিনটা বোর্ডে ছাত্রের সংখ্যা একটু বেশি। অধিকাংশ জায়গায় ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। এটা একদিকে খুশির খবর। কারণ নারী শিক্ষার ওপর আমরা বেশি জোর দিয়েছি। এইচএসসি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করেছি।’
ছেলেদের সংখ্যা কমার কারণ জানার পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিবিএসকে বলতে পারি জরিপের সময় এটা জানার চেষ্টা করতে। কী কারণে ছেলেরা কমবে? মেয়েরা বাড়লে খুশি হই। সমান সমান হলে ভালো। কিন্তু ছেলে কেন কমল এটা জানতে হবে। ছেলেরা পিছিয়ে আছে কেন জানতেই হবে। এটা যার যার বোর্ডে খোঁজ নেবেন। কিশোর গ্যাং কালচার দেখতে পাচ্ছি। কাজেই এটা খতিয়ে দেখতে হবে।’
এ বছর ২০ লাখ ১৩ হাজার ৫৯৭ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ছাত্র ছিল ৯ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৪ জন, পাস করেছে ৮ লাখ ৬ হাজার ৫৫৩ জন। অন্যদিকে ১০ লাখ ২৪ হাজার ৮০৩ জন ছাত্রীর মধ্যে ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৬০০ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।
চলতি বছর ৯টি সাধারণ বোর্ডে ৮২ দশমিক ৩৯ শতাংশ ছাত্র ও ৮৫ শতাংশ ছাত্রী পাস করেছে। মাদরাসা বোর্ডে ৭৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ছাত্র ও ৮০ দশমিক ৫৭ শতাংশ ছাত্রী এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৭৯ দশমিক ১৯ শতাংশ ছাত্র ও ৮৮ দশমিক ০৩ শতাংশ ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে।