মানব সন্তারের জীবনে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ‘মা’। শব্দটির সঙ্গে একটি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। এ মিলনের সেতুবন্ধন যিনি তিনি ‘এক বোকা অবলা’। তিনি ‘বোকা অবলা’ এই কারণে যে, তিনি সন্তানের জন্য ভালোবাসা ঢালতে, বন্ধুর পথ পারি দিতে একটুও হিসাব-নিকাশ করেন না। এক মুহূর্তের জন্যও তিনি নিজ স্বার্থের কথা চিন্তায় আনেন না। তার অন্তরে যেন সন্তানের প্রতি ভালোবাসা এক আকাশ সমান; সপ্ত সিন্ধুর গভীরতা যত বেশিই হোক না কেন ‘মা’ নামক প্রাণীটির ভালোবাসার কাছে সে গভীরতা পরাজিত। মায়েদের উপমা মায়েরা আসলে নিজেই। তাদের মমতার প্রখরতা কিছু সীমাবদ্ধ সংখ্যক শব্দের মাধ্যমে বর্ণনা করে শেষ হবে না কখনও।
আর ‘আমার মা’কে তো সুপারম্যান বলাই যায়। বাবা হারা শৈশব থেকে আমার সোনা মা আমাকে ভালোভাবে বড় করে তুলতে এই জগৎ-সংসারে কত শত দুর্গম পথই যে পাড়ি দিয়েছেন এবং দিয়ে চলেছেন তা সৃষ্টিকর্তা ছাড়া অন্য কেউ জানে না। এতটুকুই বলতে পারি, হয়তো তিনি না থাকলে আমার দ্বারা শব্দ চয়ন করে তাকে নিয়ে যৎসামান্য কিছু লিখাও সম্ভব হতো না। জীবনের প্রতিটি ভুলকে তিনি শুধরে দিয়েছেন; যে ভুলগুলো আমার জীবনে নামিয়েছিল অমানিশাÑসেই মুহূর্তগুলোয় সবাই আমাকে ছেড়ে গেলেও তিনি আমার একমাত্র সঙ্গী থেকে অতি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আমাকে শুধরিয়ে তুলেছেন। কখনও দূরে ঠেলে দেননি। যেগুলো ছিল সত্যিই পৃথিবীর চমৎকার ঘটনাগুলোর সমতুল্য। কিছু কথা অব্যক্ত থেকে কৌতূহল হয়েই থাকুক। জীবনের চরম সত্যিগুলোকে অতিক্রম করেছি; যার সঙ্গে তিনি আর কেউ নন, তিনি আমার কলিজার টুকরো জননী। যত দিন যাচ্ছে সমানুপাতিক হারে মাগো তোমার প্রতি ভালোবাসা বেড়েই চলেছে। এ বন্ধন সমানুপাতের সমীকরণে চলছে মা। শত সহস্র কোটি আবেগের ঘনঘটা ওই মানুষটিকে ঘিরে। আর তার ভালোবাসা তো ‘মারিয়ানা ট্রেঞ্চ’-এর চেয়েও গভীরতর। হয়তো প্রতিটি সন্তানের হƒদয়ে সর্বদাই ধ্বনিত হয় তোমাকে ভালোবাসি মাÑমুখে থাকে না বলা; হয়তোবা না। আর মায়েরা তো সন্তানের জন্য কলিজা কেটে টুকরো টুকরো করে দিতেও দ্বিধা করে না। সালাম, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা পৃথিবীর সব জš§দাত্রীর প্রতি। পৃথিবীর সব মা বেঁচে থাকুক শতকোটি বছর ধরে। সৃষ্টিকর্তা তাদের রহমত দিয়ে ঢেকে রাখুন। আর সন্তানদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন। কারণ আমরা জিতে গেলে জিতে যাবে মায়েরা; তারা যে সংশপ্তক।
জারিয়াতুল হাফসা
শিক্ষার্থী, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়