নিজস্ব প্রতিবেদক : ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় আগামী ৪ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার মামলাটির এজাহার আদালতে আসলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহবুবুল হকের আদালত তা গ্রহণ করেন। এরপর এই মামলায় আগামী ৪ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
শেরেবাংলা নগর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার এসআই জালাল উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় আনোয়ারুলের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস শেরেবাংলা নগর থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে মুমতারিন ফেরদৌস বলেন, ‘রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। গত ৯ মে রাত ৮টায় আমার বাবা আনোয়ারুল আজীম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।’
এজাহারে আনোয়ারুলের মেয়ে বলেছেন, “১১ মে বিকাল পৌনে ৫টায় বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললে কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই। ১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদেবার্তা আসে। এতে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। অমিত সাহার কাজে নিউ টাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেয়ার দরকার নেই। পরে ফোন দেব।’ এছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা ক্ষুদেবার্তাগুলো দিয়ে থাকতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজ করতে থাকি। কোনো সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপরও আমরা খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পারস্পরিক যোগসাজশে বাবাকে অপহরণ করেছে।’
জানা গেছে, কলকাতায় এমপি আনোয়ারুল আজীম তার কথিত বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে উঠেছিলেন। এরপর ১৮ মে কলকাতার বরাহনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন গোপাল বিশ্বাস। গোপাল বিশ্বাস বুধবার (২২ মে) সকালে পুলিশের কাছ থেকে এমপি আজীমের হত্যার খবর পান বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে জানিয়েছেন।
আট দিন নিখোঁজ থাকার পর কলকাতার নিউ টাউনের বিলাসবহুল আবাসন ‘সঞ্জিভা গার্ডেনে’ আনোয়ারুল হত্যার শিকার হন। এটিকে ‘পরিকল্পিত খুন’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘এমপি আনার খুনের ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলা যাবে না।’